বৃষ্টি ঝগড়ায় রাজপথে থৈ থৈ : ভোগান্তিতে রাজধানীবাসী

রাজধানীতে গতকাল রাত সাড়ে ১০টার পর থেকেই অঝোর ধারায় শুরু হয় বৃষ্টি। রাত বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে বৃষ্টি পরিমান। রাত ১১টার পরে মুষলধারার বৃষ্টির পানিতে ভেসে যায় রাজধানীর বিস্তীর্ণ এলাকা।

বুধবার (৫ জুলাই) সকাল থেকে থেমে থেমে চলছে গুঁড়ি গুঁড়ি ও মুষলধারার বৃষ্টি।

এ বৃষ্টির কারণে রাজপথে এখন থৈ থৈ পানি। অলিগলিসহ শাখা সড়কও পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। এতে নগরজীবনে নেমে আসে সীমাহীন দুর্ভোগ। জলাবদ্ধতায় অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে নগরী। কোথাও কোথাও পাঁচ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে যানবাহনের লেগে যায় কয়েক ঘণ্টা।

সবথেকে অফিসমুখী লোকজন ঘর থেকে বেরিয়েই পড়েন বেশি ভোগান্তিতে। বৃষ্টির কারণে রাজপথে রিকশা-সিএনজির সংখ্যা একেবারেই কমে যায়। যেগুলো ছিল সেগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়। অনেক সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। এতে আশপাশের সড়কগুলোতেও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার প্রকল্প এলাকায় পথচারী ও যানবাহনকে পড়তে হয় মহাবিড়ম্বনায়। কাদাপানিতে সয়লাব হয়ে যায় পুরো এলাকা। অনেক স্থানে রিকশা উল্টে কাদাপানিতে পড়েন যাত্রীরা।

রাজধানীর হাতিরপুল, মগবাজার, শান্তিনগর, মালিবাগ-মৌচাক, নয়াপল্টন, শেওড়াপাড়া, মিরপুর-১০ নম্বরসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক তলিয়ে যায়। রোকেয়া সরণির কাজীপাড়া থেকে মিরপুর-১০ নম্বর পর্যন্ত প্রধান সড়ক পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। এ ছাড়া নিচু এলাকায় তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। অনেক এলাকার পানির সঙ্গে স্যুয়ারেজের লাইনের বর্জ্য যুক্ত হয়ে যাওয়ায় দুঃসহ অবস্থা সৃষ্টি হয়।

অনেক স্থানে ম্যানহোলে চাকা ঢুকে যাওয়ায় রিকশা উল্টে গিয়ে যাত্রী আহত হন। কাঁচাবাজারগুলোর দৃশ্য ছিল করুণ।

এদিকে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় দেশব্যাপী আগামী দুদিন থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তবে কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের কথাও বলা হয়েছে।

এদিকে ভারী বর্ষণের কারণে দেশের পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের আশঙ্কার কথা জানিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে অধিদফতর।

বুধবার সকালে আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, দেশের আকাশে মৌসুমী বায়ু সক্রিয়। আগামী দুদিন দেশব্যাপী থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হবে। ৭২ ঘণ্টা পর আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের কথাও বলেন এ তিনি।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত রাজধানীতে ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একই সময়ে দেশের সবচেয়ে বেশি ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সীতাকুণ্ডে।

এদিকে গতকাল রাতভর থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে সকালেই ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামীসহ স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। আর ভোগান্তির সুযোগ নিয়ে বাড়তি ভাড়া হাঁকাচ্ছেন রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকরা।