বেসরকারি ৫ মেডিকেল কলেজে ভর্তি নয়

দেশের পাঁচ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ চলতি বছর এমবিবিএস কোর্সে (শিক্ষাবর্ষ ২০১৭-২০১৮) শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে না। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা ২০১১ (সংশোধিত) এর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন শর্ত না মানায় ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে সরকার।

মেডিকেল কলেজগুলো হলো— রাজধানীর গুলশানের শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ, ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আদ-দ্বীন বসুন্ধরা মেডিকেল কলেজ, খুলনা বয়রার আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ, উত্তরা আবদুল্লাপুরের আইচি মেডিকেল কলেজ, মোহাম্মদপুর ইকবাল রোডের কেয়ার মেডিকেল কলেজ ও ধানমন্ডির নদার্ন ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ। এ সব মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করে ২৭ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব উম্মে কুলসুম স্বাক্ষরিত পৃথক পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে কী কারণে কোন কোন মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না তা উল্লেখ করেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো.আবদুর রশীদ জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে মেডিকেল কলেজ স্থাপন, অনুমোদন, স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার, আসন বৃদ্ধি ও নবায়ন বৃদ্ধি সংক্রান্ত এক সভায় ওই সব মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়।

বর্তমানে সরকারি ৩১টি, বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৬৯টি। সরকারি ও বেসরকারি উভয় মিলিয়ে মোট আসন সংখ্যা ৯ হাজার ৫৬৮। তার মধ্যে সরকারি ৩হাজার ৩১৮ ও বেসরকারি ৬ হাজার ২৫০টি আসন।

আগামী ৬ অক্টোবর সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় ৮২হাজারেরও বেশী পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। মেধা তালিকার ভিত্তিতে উত্তীর্ণদের প্রথমে সরকারি মেডিকেল কলেজে আসন পূরণের পর বেসরকারিতে ভর্তি শুরু হবে।

যে সব কারণে সাময়িকভাবে বিভিন্ন কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত

আদ-দ্বীন বসুন্ধরা মেডিকেল কলেজ : বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা ২০১১ (সংশোধিত) এর গুরত্বপূর্ণ বিভিন্ন শর্ত যেমন : নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নামে রেজিস্ট্রেশন ও একই ক্যাম্পাসে স্থানান্তর এবং দ্রুত সকল শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ ও হাসপাতালের বেড অকুপেন্সি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভর্তি স্থগিত করা হয়।

আইচি মেডিকেল কলেজ : আলাদা একাডেমিক ভবন তৈরি, বেজমেন্ট থেকে এনাটমি বিভাগ পরিবর্তন, রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি ও হাসপাতালের বিছানাগুলো বিষয়ভিত্তিক সাজানো ও সকল বিভাগে শিক্ষক সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি স্থগিত করা হয়।

শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ : মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিজস্ব নামে জমি বৃদ্ধি, হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা এবং বেড অকুপেন্সি বৃদ্ধি, কনফারেন্স রুম বড়, হল স্টেপ ডাউন প্যাটার্ন করা ও শিক্ষক সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে এবং স্থায়ী আমানত সমন্বয় করতে হবে।

কেয়ার মেডিকেল কলেজ : বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা ২০১১ (সংশোধিত) এর গুরত্বপূর্ণ বিভিন্ন শর্ত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নামে নিজস্ব জমি বৃদ্ধি, কলেজের নিজস্ব নামে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল তৈরি ও শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। সে লক্ষ্যেই চলতি শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।

নর্দান মেডিকেল কলেজ : জমি ও একাডেমিক ভবন সম্প্রসারণ, উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধি ও রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধিসহ একাডেমিক পরিবেশ উন্নতির লক্ষ্যে ভর্তি স্থগিত করা হয়।