বেহাল সড়কের ভোগান্তিতে দশ লাখ মানুষ

সাতক্ষীরা জেলার ব্রহ্মরাজপুর ডি.বি গার্লস হাইস্কুলের সামনে সড়কে জমেছে হাঁটু জল। স্কুলের প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ পানি ঠেলে পার হতে গিয়ে নাকাল হয়ে পড়ছেন। একই অবস্থা ব্রহ্মরাজপুর ডি. বি ইউনাইটেট হাইস্কুলের সামনেও। এ স্কুলে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। সড়কের পানি পার হয়ে স্কুলে যেতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, শিক্ষার্থীদের পাশাশাশি সাধারণ মানুষও নাকানি চুবানি খাচ্ছেন এ সড়কে। ব্রহ্মরাজপুর বাজারের দু’প্রান্তে সড়ক বিভাগ পিচের উপর ইটের সোলিং নির্মাণ করায় পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে সড়কটিতে পানি জমে খালের আকার ধারণ করে।

এমনিতে সাতক্ষীরা আশাশুনি সড়কটি আস্ত নেই। ২৪ কিলোমিটারের এ সড়কটি ভরে গেছে খানাখন্দে। সাতক্ষীরা সদর, আশাশুনি, দেবহাটা, কালিগঞ্জ, খুলনার পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকার পণ্য পরিবহনের একমাত্র রুট এটি। রোগি আনা নেয়ায়ও চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় বলে জানান ভুক্তভোগিরা। এ অবস্থা একদিন দুদিনের নয়। বছরের পর বছর চলছে দুর্ভোগ। সড়কেই ম্লান হয়ে গেছে সরকারের উন্নয়ন।

স্কুলের শিক্ষার্থী খাদিজা খাতুন, জান্নাতুল ফেরদৌস বৈশাখি, জাহিদা খাতুন, রহিমা খাতুন, অর্পিতা সাহা, শিলা খাতুনসহ শিক্ষার্থীরা তাদের দুর্ভোগের কথা জানিয়েছে। তারা বলেছে, সামান্য বৃষ্টিতেই স্কুলের গেটের জমে হাঁটু পানি। পানি ঠেলে পার হতে গিয়ে তাদের জামা কাপড় বইখাতা ভিজে যায়। চরম দুর্ভোগের শিকার তারা।

ডি.বি, গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. এমাদুল ইসলাম দুলু বলেন, তার স্কুলের সামনে রাস্তার উপর জমেছে হাঁটুজল। স্কুলের প্রায় চারশ’ শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। স্কুলের সামনে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা অনেকেই স্কুলে আসতে চায় না। সড়কটি পার হতে অনেক সময় শিক্ষার্থীদের পোশাক ও বইখাতা ভিজে একাকার হয়ে যায়। এতে অনেকেই ক্লাশ করতে পারে না।

তিনি আরো জানান, স্কুলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে একটি নতুন ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। কিন্তু সড়কটির বেহাল দশার কারণে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মালামাল আনতে পারছেন না। যে কারণে স্কুল ভবনটি নির্মাণে অযথা সময় ক্ষেপন হচ্ছে। আর প্রভাব পড়ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর।

প্রধান শিক্ষক বলেন, ভবন নির্মাণ করার কারণে স্কুলের পুরাতন ঘরটি ভাংতে হয়েছে। যে কারণে শ্রেণিকক্ষ সংকট প্রকট হওয়ায় স্কুলের ছাদের উপর টিন শেড দিয়ে অতি কষ্টে রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে ক্লাশ পরিচালনা করতে হয়। সড়কটি সংস্কার হলে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে সম্পন্ন হবে। দুর্ভোগও লাঘব হবে বলে জানান তিনি।

এলাকাবাসি অবিলম্বে সড়কটি সংস্কারের জোর দাবি জানিয়েছে।