ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারাল আর্জেন্টিনা

আর্জেন্টিরার কোচ হিসেবে অভিষেকটা ভালোই হলো হোর্হে সাম্পাওলির। আর্জেন্টিনার কোচের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম ম্যাচটাই তার ব্রাজিলের বিপক্ষে। এবং প্রথম ম্যাচেই করলেন বাজিমাত। মেলবোর্নের ক্রিকেট গ্রাউন্ডে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয় এনে দিলেন আর্জেন্টিনাকে। ম্যাচের প্রথমার্ধেই ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল তার শিষ্যারা। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে (৪৫ মিনিটে) গোলটি করেছেন গ্যাব্রিয়েল মার্কাদো। দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনো পক্ষই গোল করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ১-০ ব্যবধানেই শেষ হলো ম্যাচটি।

ব্রাজিলের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে অপরাজিতই ছিলেন কোচ তিতে। টানা ৯টি ম্যাচ জিতেছিলেন তিনি। অবশেষে ১০ম ম্যাচে এসে প্রথম পরাজয়ের স্বাদ নিলেন তিনি। হারলেন আর্জেন্টিনার কাছে।

ব্রাজিল খেলছে নেইমারকে ছাড়াই। অপরদিকে হোর্হে সাম্পাওলি একাদশ সাজিয়েছেন মেসি-হিগুয়াইনদের দিয়েই। মোটকথা শক্তিশালী দল নিয়ে মাঠে নেমেছে আর্জেন্টিনা। যার ফল তারা পেয়ে গেছে প্রথমার্ধেই, ১-০ গোলে এগিয়ে থাকার মধ্য দিয়ে।

খেলার শুরুটা ছিল অবশ্য নিরুত্তাপ। ধীরে ধীরে খেলা জমাতে থাকে আর্জেন্টিনা। ১৮ মিনিটে ব্রাজিলের রেনাতো অগাস্টোর শট বার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। ২০ মিনিটে ফিলিপ কৌতিনহোর একটি শট বক্সের সামনেই ক্লিয়ার করে দেয় আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডাররা। ২২ মিনিটে উইলিয়ানের কাছ থেকে বল পেয়ে ফিলিপ কৌতিনহো আরও একটি শট নেন। সেটিও ধাক্কা খায় বক্সের মাঝে এসে।

২৪ মিনিটে আর্জেন্টিনার অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া বল পান এভার বানেগার কাছ থেকে। বল পেয়েই বাঁ পায়ের শট নেন। সেটি রক্ষা করেন ব্রাজিল ডিফেন্ডাররা। ৩৪ মিনিটে ফিলিপ লুইসের একটি শট একেবারে পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। অল্পের জন্যই বলতে গেলে রক্ষা পেয়েছে ব্রাজিল। ৩৯ মিনিটে একেবারে কোণ থেকে বাঁ পায়ের শট নেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। কোনাকুনি আসা শটটি ফিরিয়ে দলকে রক্ষা করেন ব্রাজিল গোলরক্ষক।

তবে ৪৫ মিনিটে আর্জেন্টিনার সম্মিলিত আক্রমণটি আর ঠেকাতে পারেনি ব্রাজিল। বক্সের সামনে থেকে মেসি বল দেন ডি মারিয়াকে। তিনি বলটি ভাসিয়ে দেন বক্সের সামনে ঝড়ো হয়ে থাকা তার সতীর্থদের কাছে। সেখানে বলটিতে দুর্দান্ত হেড করেন নিকোলাস ওতামেন্দি। কিন্তু বলটি সাইড বারে লেগে ফিরে আসার মুহূর্তে পেয়ে যান গ্যাব্রিয়েল মার্কাদো। সামনে পুরো ফাঁকা পোস্ট। ব্রাজিলের জালে বল জড়াতে তাই কোনোই কষ্ট হয়নি তার। ১-০ গোলে এগিয়ে গেলো আর্জেন্টিনা।

পিছিয়ে থাকার কারণে দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিল তেড়েফুঁড়ে আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগে আক্রমণ চালাবে- এমনটাই ভেবেছিল সবাই; কিন্তু ব্রাজিলের পক্ষ থেকে তেমন আক্রমণাত্মক কোনো কিছুই দেখা গেলো না। ৫৩ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল জেসুসের কাছ থেকে একটি আক্রমণ দেখা গিয়েছিল। তবে তার শটটি ঠেকিয়ে দেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো।

৫৭ মিনিটে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার বাম পায়ের একটি শট ব্লক হয়ে যায় পোস্টের সামনেই। এর দুই মিনিট পর গ্যাব্রিয়েল জেসুসের কাছ থেকে বল পেয়ে শট নিয়েছিলেন ফিলিপ কৌতিনহো। তবে, সেটাকে ঠেকিয়ে দেন আর্জেন্টিনা ডিফেন্ডাররা। পরের মিনিটে আবারও গ্যাব্রিয়েল জেসুসের আক্রমণ। তার ডান পায়ের শট ফিরিয়ে দেন গোল রক্ষক সার্জিও রোমেরো।

এ সময় ৫ মিনিটের মধ্যেই যা ব্রাজিল বেশ কিছু ভালো আক্রমণ করেছিল। সবগুলোরই শেষ প্রান্তে ছিলেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। কিন্তু তার চেষ্টাগুলোর কোনটাই আলোরমুখ দেখেনি। ৬৭তম মিনিটে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার একটি চেষ্টা রুখে দেন ব্রাজিল ডিফেন্স। ৭৬ মিনিটে জে কোরিয়ার ডান পায়ের একটি শট ফিরিয়ে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক।

আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে এভাবেই শেষ পর্যন্ত খেলা চলতে থাকে। যদিও কেউ কারও জালে বল প্রবেশ করাতে পারেনি। তবে, ৮৮তম মিনিটে এসে দারুণ আহত হন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। আর্জেন্টিনার এমানুয়েল মামানার কনুয়ের গুঁতো লাগে জেসুসের চোখে। শেষ পর্যন্ত আহত হয়েই মাঠ ছাড়তে হয় জেসুসকে।