‘ভাট আইন স্থগিতে কমতে পারে উন্নয়নে বরাদ্দ’

সব পণ্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট স্থগিত হওয়ায় রাজস্ব আদায় ২০ হাজার কোটি টাকা কম হবে বলে সংসদে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, এ কারণে উন্নয়ন বাজেট কাটছাঁট হতে পারে অথবা ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ বাড়তে পারে।

বৃহস্পতিবার চলতি বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রীর পরিকল্পনা অনুযায়ী এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘাতটির মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান নেয়া হবে ৫১ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা। বাকি টাকা আসবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। এর মধ্যে ২৮ হাজার ২০৩ কোটি টাকা নেয়া হবে ব্যাংক ঋণ। আর ব্যাংক বহির্ভুত খাত থেকে নেয়া হবে ২২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা। প্রধানত সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে এই টাকা তোলা হবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী উন্নয়ন বাজেট ব্যাংক ঋণ ২৮ হাজার কোটি টাকার চেয়ে বেশি হতে পারে অথবা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি এক লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকা থেকে কমতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিরোধীদলের দাবি পরিপ্রেক্ষিতেই ভ্যাট স্থগিত করা হয়েছে। মাননীয় বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, এটা রাজস্ব আদায়ে ক্ষতি কি হবে? ক্ষতি কিন্তু হয়েছে। কারণ মোবাইল ফোন থেকে কি আয় হবে রাজস্ব সেটা ধরে নিয়েই কিন্তু বাজেটটা করা হয়েছে।’

‘আজ ভ্যাট স্থগিত করায় ২০ হাজার কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় হবে। সেটা আমাদের যেভাবে হোক ব্যবস্থা করতে হবে। হয় ব্যাংকের লোন নিতে হবে, নয় তো আমাদের উন্নয়ন বাজেট কাটছাঁট করতে হবে। আমাদের কিন্তু এই ব্যবস্থা নিতে হবে’-বলেন প্রধানমন্ত্রী।

গত ১ জুন সংসদে চলতি অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন। আর সংসদে এক মাস বিতর্কের পর গত ২৯ জুলাই তা পাস হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আয়ের যে পরিকল্পনা করেছিলেন তার একটি বড় অংশ আসতো ভ্যাট থেকে।

চলতি অর্থবছরে দুই লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তাতে ভ্যাট থেকে আসতো ৯১ হাজার কোটি টাকার বেশি। তবে সংসদ সদস্যদের ব্যাপক আপত্তির মুখে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে অর্থমন্ত্রী ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব দুই বছরের জন্য স্থগিত করেন। এ কারণে এখন ভ্যাট থেকে আয় হতে পারে ৭১ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি।

বাজেট অধিবেশনকে সফল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ছাড়া সর্বমোট ২০৭ জন সংসদ সদস্য বক্তব্য রেখেছেন ৫৭ ঘণ্টা ১৪ মিনিট।’ তিনি বলেন, ‘বিরোধীদল তো বিরোধিতা করবেই। তবে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করেছেন।’ বাজেট নিয়ে সরকারিদল, বিরোধীদল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদেরকে তিনি ধন্যবাদ জানান।

আজকের বাংলাদেশ সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা। মন্দা থাকার পরও আমরা আমাদের প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করেছি। দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে। আমরা বাজেট বৃদ্ধি করেছি। এরআগে এত বড় বাজেট কিন্তু আগে কখনো দেয়া হয়নি।’