ভারতীয় ক্রিকেটের সংস্কারের বিরুদ্ধে শ্রীনিদের জোট!

ভারতীয় ক্রিকেটকে সবচেয়ে বেশি আর্থিক লাভের মুখে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এটা যেমন সত্যি, আবার এও সত্যি, খেলা মানে শুধু টাকা-পয়সার ঝনঝনানি নয়। খেলাটার মধ্যে একটা সততার শিক্ষাও থাকে। ভারতীয় ক্রিকেট সবচেয়ে কলঙ্কিত হয়েছে এন শ্রীনিবাসনের আমলেই। ম্যাচ পাতানো কেলেঙ্কারিতে সরাসরি জড়িত থেকে নিষিদ্ধ হয়েছেন শ্রীনির জামাই, আর তাঁর দল চেন্নাই সুপার কিংস।

ভারতের ক্রিকেট যখন ভাবমূর্তির তীব্রতম সংকটে, সেই সময় হস্তক্ষেপ করেছিলেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত হয় লোধা কমিশন। আর সেই কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে গড়িমসি করায় ক্রিকেট প্রশাসন থেকে একরকম নির্বাসনে চলে যেতে হয় আগের সব কর্তাব্যক্তিকে। শ্রীনি, অনুরাগ ঠাকুররা চলে যান ব্যাকফুটে।

তবে এই মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত বোর্ডের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটিই (সিওএ) উল্টো চাপের মুখে। অনিল কুম্বলের বাধ্য হয়েই সরে যাওয়া, এর প্রতিবাদে কমিটি থেকে রামচন্দ্র গুহের পদত্যাগ; আরেক সদস্য বিক্রম লামিয়ের বিদায়ের প্রস্তুতি নেওয়া; পাশাপাশি আইসিসি থেকে শ্রীনির নীল নকশার তিন মোড়ল নীতির বিলুপ্তি, লভ্যাংশ কমে যাওয়া—সব মিলিয়ে সেই অন্তর্বর্তী কমিটির সময়টাও খারাপ যাচ্ছে। সিওএর এই ব্যাকফুটে থাকার সর্বোচ্চ ফায়দা নিতে শ্রীনিবাসনের নেতৃত্বে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বোর্ডের বিক্ষুব্ধ অংশ।

বোর্ডের বিশেষ সাধারণ সভায় স্পষ্টতই প্রশ্ন তোলা হয়েছে লোধা কমিশনের বেশ কিছু সুপারিশের যৌক্তিকতা নিয়ে। তাদের আপত্তির মুখে আছে যে প্রস্তাবগুলো, সেগুলো লোধা কমিশনের মূল সুপারিশগুলোর মধ্যেই পড়ে। যেগুলো বাস্তবায়ন করতে না পারা মানে ভারতীয় ক্রিকেটের সেই তিমিরেই থেকে যাওয়া। সংস্কার হয়ে যাবে নামকাওয়াস্তে।

এই সংস্কার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছেন শ্রীনি ও নিরঞ্জন শাহ। একসময় দুজনের মধ্যে এন্তার দ্বন্দ্ব থাকলেও অস্তিত্বের প্রশ্নে তাঁরা এখন হাত মিলিয়েছেন। এই জোটের মূল আপত্তি তিনটি জায়গায়: ৭০ বছর বয়সের বেশি কেউ বোর্ডের দায়িত্ব নিতে না পারা, নয় বছরের বেশি হয়ে গেলে বোর্ড থেকে বিদায় নেওয়া, টানা তিন বছর দায়িত্ব পালন করে ‘কুলিং পিরিয়ডে’ যাওয়া—এই শর্তগুলো সবই শ্রীনিদের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণেই এগুলোর বাস্তবায়ন ঠেকাতে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ‘এক রাজ্য এক ভোট’ নীতির সুপারিশকে।