ভারতীয় জাতীয় সংগীত গাইল না মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা

ফরমান ছিল কড়া। যোগীর রাজ্যে মাদ্রাসাগুলিতে স্বাধীনতা দিবসে পতাকা তুলতে হবে। গাইতে হবে জাতীয় সংগীত। পুরো কর্মসূচি ক্যামেরাবন্দী করেও রাখতে হবে। এ নির্দেশ ঘিরে বহু বিতর্কের জল গড়িয়েছে। অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মৌলভীরা। তাই স্বাধীনতা দিবসে পড়ুয়ারা কী করে, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল। বাস্তবে দেখা গেল, জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হলেও, ‘জনগণমন’ মুখেও আনল না মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা।

ঘটনা উত্তরপ্রদেশের বরেলির। শহরের সব থেকে বড় মাদ্রাসা মঞ্জর-ই-ইসলাম। সেখানেই জমায়েত হয়েছিল কয়েকশো পড়ুয়া। সকলে মিলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন কর্মসূচিতে অংশ নেয়। কিন্তু জাতীয় সংগীত গাওয়া হল না। বদলে পড়ুয়ারা গাইল ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা…’। মোহাম্মদ ইকবালের এ গানেই দেশের প্রতি ভালবাসা ব্যক্ত করল তারা। কিন্তু সরকারি নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও কেন এ বিরুদ্ধাচরণ, সে প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠেছে।

এদিকে যোগীর এই নির্দেশিকা নিয়ে বিতর্ক কম ছিল না। বলা হচ্ছিল, ইসলাম সম্প্রদায়ের মানুষের দেশভক্তির উপর সন্দেহ হওয়াতেই কি এই সিদ্ধান্ত? কেন দেশেপ্রেমের প্রমাণ দিতে হবে দেশেরই এক সম্প্রদায়ের মানুষকে, সে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছিলেন অনেকে।

অন্যদিকে পালটা দাবি ছিল, দেশকে ভালবাসলে জাতীয় সংগীত গাইবে না কেন পড়ুয়ারা? এক মৌলবি ঘোর অনাস্থা জানিয়ে বলেছিলেন, চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী তাঁরা জাতীয় সংগীত গান না।

কেননা, জাতীয় সংগীতের এমন কিছু লাইন আছে, বিশেষত শেষ লাইনে ‘জয় হে’- গাওয়ার সময় মনে হয়, বুঝি আল্লাহকেই ছোট করা হচ্ছে। যদিও এ নিয়ে বাড়তি একটি শব্দও খরচ করেনি যোগী প্রশাসন। স্বাধীনতা দিবসের কর্মকাণ্ডেরই অপেক্ষা ছিল।

আজ নিজেদের অবস্থানে অনড়ই থেকেছে অধিকাংশ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ গাওয়া হয়নি জাতীয় সংগীত। এবং সাফাই হিসেবে ওই পুরনো কাসুন্দিই টেনেছেন মৌলভীরা। সরকারি নির্দেশ অমান্য করার এই সিদ্ধান্ত বর্ষীয়ান মৌলবি আসজাদ মিঞার। এরপর সরকারের পদক্ষেপ ঠিক কী হবে, সে জল্পনাই ছড়াচ্ছে গোটা দেশ জুড়ে।