ভারতে গো-রক্ষার নামে ২৩ মুসলমান হত্যা, চলছে ধর্ষণ

দুই সহোদর ঈদের কেনাকাটা করে ট্রেনে করে বাড়ি ফিরছিল। সেই ট্রেনেই দু’একজন মনে করে তাদের কাছে গো-মাংস রয়েছে, সেই সন্দেহ থেকে মারপিট। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় হাফেজ জুনাইদের, অপরজনকে পাঠানো হয় হাসপাতালে। এভাবে ঠুনকো সন্দিগ্ধ অজুহাতে এখন পর্যন্ত ২৩ জন মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে ভারতে।

গরু বিক্রি করেছে, গো-মাংস বহন করেছে, এমকি গরুর মাংস খায এমন সন্দেহের কথা বলে ভারতে মুসলমান হত্যা চলেছে। কিন্তু রাজনৈতিক নেতা ও সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা চলছে ভারতের সর্বমহলে। অবশেষে বৃহস্পতিবার(২৯ জুন) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘গো-রক্ষার নামে মানুষ খুন কিছুতেই বরদাস্ত করা যায় না। কেউই নিজের হাতে আইন তুলে নিতে পারে না।’

এমন ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খুন হলেন ঝাড়খণ্ডের ব্যবসায়ী। তার গাড়িতে গো-মাংস আছে এমন কথা বলে কোনো কিছু বলতে দেয়ার সুযোগ দেয়নি দুস্কৃতিকারীরা। রামগড়ের বাজারটাঁড়ের কাছেই এক বাজারের পাশে আসগার আলি ওরফে আলিমুদ্দিনকে(৫০) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় তার গাড়িটি।

এখন পর্যন্ত ২৩জন মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে। যার মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। যেসব ঘটনা পত্রিকায় এসেছে, এটি তার হিসাব। দবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রকৃত সংখ্যাটি আরো বেশি হবে। অনেক পরিবারই অন্যান্য সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না। দেশটির এক পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালে গো-রক্ষার নামে মুসলমান হত্যায় ৩২টি মামলা করা হয়েছে।

এখন গো-রক্ষার নামে হিংস্র কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে। দুর্স্কম করতে এখন গরুকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় লোম হর্ষক ঘটনা ঘটেছে দেশটির হারিয়ানা রাজ্যে। মেওয়াত এলাকায় দুই মুসলিম নারীকে ধর্ষণ ও তাদের রক্ষায় এগিয়ে আসা দুই আত্মীয়কে হত্যা করে দুস্কৃতিকারীরা। পরে ধর্ষিত নারীরা বলেছেন, রাতের বেলা তারা বাসায় ঢুকে। এসময়ে তাদের বলা হয়, কেনো গরুর মাংস খাস। একথা বলেই নির্যাতন শুরু করে।

অধিকাংশ ঘটনাই দেশটির উত্তরের রাজ্যগুলোতে হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা হয়েছে শুধু বিজেপি নেতাদের গরু রক্ষা করতে উসকে দেয়া বক্তব্যে। ২০১৪ সাল থেকে গো-রক্ষার নামে মানুষ হত্যা ও রাজ্য সরকারও এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে পারেনি। সবক্ষেত্রেই নির্যাতিতরা কোনো বিচার পাননি।