ভারত-পাকিস্তান ঝগড়া করুক চায় না আইসিসি

অবশেষে মুখ খুলেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিসিসিআই) ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) মধ্যকার চলমান কোন্দলে মধ্যস্থতা করার ইঙ্গিত দিয়েছেন আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন। তিনি বলেছেন, তাঁরা কখনোই সদস্যদেশগুলোর মধ্যে ঝগড়াবিবাদ প্রত্যাশা করেন না। ইনডিপেনডেন্টস কাপের খেলাগুলো দেখতে রিচার্ডসন এখন পাকিস্তানে।

পিসিবি সব সময়ই দাবি করেছে, বিসিসিআই দ্বিপক্ষীয় সিরিজের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তির বরখেলাপ করেছে। ২০১৪-তে দুই বোর্ড এই চুক্তি স্বাক্ষর করে, যেখানে ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৬টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হওয়ার কথা। মোট ১৪টি টেস্ট, ৩০টি ওয়ানডে ও ১২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সাজানো চারটি সিরিজ পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু চুক্তিতে শুভংকরের ফাঁকি ছিল, এই সিরিজের ছাড়পত্র দেওয়ার কথা দুই সরকারের। সাম্প্রতিক সময়ে কূটনৈতিক সম্পর্কের রেশ ধরে ভারত সরকার শীতল অবস্থান নিয়েছে। ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পর তাঁরা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক একরকম ছিন্নই করেছে। যার প্রভাব পড়েছে ক্রিকেটে।

অবশ্য এর মধ্যে কথা উঠেছিল, অন্যান্য খেলা, এমনকি বাণিজ্যেও দুই দেশের সম্পর্ক চলতে পারলে ক্রিকেটে কেন চলবে না? পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে খেলতে মরিয়া। বেশ কয়েকবার তারা আদালতে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল বিসিসিআইকে। সর্বশেষ আইসিসির দ্বারস্থ হয়েছে। আইসিসি এ ব্যাপারে মধ্যস্থতা করার উদ্যোগ নিয়েছে।

রিচার্ডসন অবশ্য কূটনৈতিক অবস্থান থেকেই বলছেন, ‘আমি বুঝি যে তাদের (দুই দেশ) মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছে না। সরকারের অনুমতি ছাড়া ভারত খেলতে যাবে না। পিসিবি ভারতে, পাকিস্তানে বা নিরপেক্ষ ভেন্যুতে সিরিজ আয়োজন করতে চেয়েছিল। এখন তারাই ভারতের বিপক্ষে বিরোধ নিষ্পত্তির আরজি পেশ করেছে। আমাদের দায়িত্ব হলো যথাসম্ভব বিরোধ নিষ্পত্তি করা। সদস্যদেশগুলো ঝগড়াবিবাদ করুক, এটা আমরা কখনোই চাই না।’

এদিকে আইসিসি সমঝোতায় ব্যর্থ হলেও যাতে নিজেদের ক্ষতি না হয়, পিসিবি তাই আইনি প্রক্রিয়ায় কোনো ফাঁক রাখছে না। ক্ষতিপূরণ তো দাবি করেছেই, আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকে বসছেন বলে দাবি করেছেন পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি, ‘আইসিসির কাজের প্রক্রিয়া তো শেষ পর্যায়ে আছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের সর্বশেষ বৈঠকে সভাপতি ছিলেন (শশাঙ্ক) মনোহর। আইনজীবীরা তৈরি আছেন, প্রয়োজনে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

চূড়ান্ত সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন পিসিবি চেয়ারম্যান, ‘আমরা দুই মাসের মধ্যে আইসিসিতে ফিরব। পুরো ব্যাপারটি খতিয়ে দেখার জন্য আমরা তিন সদস্যের কমিটি প্রস্তাব করেছি, একজনকে মনোনীতও করেছি। আমরা একটি যৌক্তিক ফল চাই।’ সূত্র : রয়টার্স।