ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার

ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই (মঙ্গলবার দিনগত রাত ১২টা) রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের অম্লান স্মৃতি বিজড়িত মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহর। ৬৬ বছর আগে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির এই দিনে রফিক, সালাম, বরকত, সফিউর, জব্বাররা মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন। তাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছিল মায়ের ভাষা, বাংলা বর্ণমালা।

রাত ১২টা ১ মিনিট থেকেই অর্থাৎ ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামবে, শ্রদ্ধা জানানো হবে ভাষা শহীদদের। প্রতি বছরের মতো এবারও সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ইতোমধ্যেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিসহ চৌহদ্দিতে রঙ করা, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা বেস্টনি, সিসিটিভি স্থাপন ও শহীদ মিনারের মূল বেদির উত্তর দিকের দেয়ালে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দেয়াল লিখনসহ প্রয়োজনীয় সার্বিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

সোমবার দিনগত রাত ও আজ (মঙ্গলবার) সকালে সরজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রবেশমুখসহ চারপাশে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কেউ যেন প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য পুলিশ সদস্যরা ডিউটি করছেন। চারপাশে বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।

২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর মন্ত্রী ও ভিভিআইপিদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সর্বস্তরের জনগণের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার উন্মুক্ত থাকবে। সাধারণ মানুষদের জন্য শ্রদ্ধা নিবেদন ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য আলাদা রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, আগামীকাল (২১ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার) শুধু বাংলাদেশশেই নয়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে বিশ্বজুড়ে পালিত হবে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ৩০তম সম্মেলনে ২৮টি দেশের সমর্থনে ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যা ২০০০ সাল থেকে বিশ্বের ১৮৮টি দেশে একযোগে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।