মনে আছে সাঈদ আনোয়ারের সেই রেকর্ড?

সাঈদ আনোয়ার। নামটা শুনলেই যেন চোখটা ঝলমল করে উঠে। তৎকালীন সময়ে ক্রিকেটীয় বিনদনের অন্যতম খোরাগ ছিলেন। তিনি ক্রিজে থাকা মানেই চার ছক্কার উৎসব দেখতে দর্শকদের নরেচরে বসা। আজ অবশ্য একটু বেশিই মনে পড়ছে পাকিস্তানের সাবেক এই ওপেনারকে। ১৯৯৭ সালের এই দিনেই চেন্নাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ১৪৬ বলে ১৯৪ রান করে রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি।

সাঈদের রেকর্ড গড়া সেই ম্যাচে পাকিস্তান জিতেছিল ৩৫ রানে। ওই সময় এটাই ছিল ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। সাঈদ আনোয়ারের সেই রেকর্ড প্রায় একযুগ টিকেছিল। ভারতীয় বোলারদের তুলোধুনো করার পথে ২২ চার ও পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন তিনি। তার রেকর্ডটি ২০১০ সালে ভাঙেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০০ রান করে অপরাজিত থাকেন। অবশ্য শচীনও এখন আর এই রেকর্ডের মালিক নন। বীরেন্দর শেওয়াগ হয়ে সেটি এখন রোহিত শর্মার দখলে।

১৯৮৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় সাঈদ আনোয়ারের। ২০০৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেন এক সময়ের অন্যতম বিশ্বসেরা এ ব্যাটসম্যান। ক্রিকেটটা পেয়েছিলেন বাবার সূত্রে। তার বাবাও ছিলেন ক্রিকেটার, খেলতেন ক্লাব পর্যায়ে। আর সাঈদ আনোয়ার নিজেও ইঞ্জিনিয়ার, কম্পিউটার সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার।

বর্তমান প্রজন্মের ক্রিকেটপ্রেমীরা হয়তো সাঈদ আনোয়ারে নাম জানেন না। হয়তো তার খেলাও দেখেননি। কিন্তু যারা এই পাক তারকার খেলা দেখেছেন তারা হয়তো এখনও মনে রেখেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে। যারা তার সম্পর্কে জানেন না তাদেরকে জানাতে উদ্যোগ নিয়েছে আইসিসি।

আগামী ১ জুন থেকে ইংল্যান্ডে শুরু হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু হওয়ার আগে আইসিসি আগের আসরগুলোতে ক্রিকেটারদের করা পারফরম্যান্স সবাইকে মনে করিয়ে দেয়ার এক মাধ্যম হিসেবে ফেসবুককে ব্যবহার করছে। সেখানেই সাইদ আনোয়ারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ক্যারিয়ার প্রকাশ করে আইসিসি।

একসময়কার ক্রিকেট মাঠে বাইশ গজের এই শাসক এখন আর সম্পৃক্ত নয় ক্রিকেটের সঙ্গে। তিনি আমূল বদলে গেছেন। একটা ঘটনা তথা মৃত্যু বদলে দিয়েছিল পাকিস্তানের সর্বকালের অন্যতম ওপেনিং ব্যাটসম্যান সাঈদ আনোয়ারের জীবন। ওই ঘটনার জের ধরে তিনি এখন ক্রিকেট মাঠে নয়, বরং মসজিদে মসজিদে, লোকালয়ে ছুটে চলেছেন ইসলামের সুমহান বাণী প্রচারে। পবিত্র আল কোরআন পাঠ করে এবং ব্যাখ্যা করে জীবন কাটছে এখন সাঈদ আনোয়ারের। ঘনিষ্ঠভাবে তিনি জড়িত তাবলিগ জামাতের সাথে। তাবলিগি কাজে সাঈদ আনোয়ার বাংলাদেশেও এসেছেন বেশ কয়েকবার। পাকিস্তানি এই গ্রেট ওপেনারের জীবনকে বদলে দেয়া ওই ঘটনাটি ছিল মেয়ে বিসমা’র মৃত্যু।