মহাসড়কে ধীরগতিতে চলছে গাড়ি

ঈদের ছুটি রোববার থেকে শুরু হলেও আগের দুদিন সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় কার্যত আজ থেকেই যেন ছুটি শুরু। তাই আজ নগরের বিভিন্ন বাসস্টেশনে ঈদযাত্রীদের ভিড় ছিল বেশ। তবে মহাসড়কগুলোর কোথাও ব্যাপক যানজটের খবর পাওয়া না গেলেও ছিল টুকরো টুকরো যানজট। গাড়ি চলেছে ধীরগতিতে।

গাবতলী : রাজধানী অন্যতম বাসস্ট্যান্ড গাবতলী। সকাল সাতটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত বাস টার্মিনালে থেকে দেখা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজ শুক্রবার সকালে এখানকার দৃশ্যপট ভিন্ন। গতকাল বাস সময়মতো আসছিল। যাত্রীরাও ঠিকঠাক গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। আজ পরিস্থিতি আলাদা। সকালবেলা কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, বিরক্তমুখে বসে আছেন যাত্রীরা। বেশির ভাগ বাসই সময়মতো আসছে না। গাবতলী থেকে উত্তর ও দক্ষিণের রুটের বাসগুলো ছাড়ে। কাউন্টারে রাজশাহী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ উত্তর দিকের যাত্রীদের ভিড়ই বেশি। অবশ্য বরিশাল, খুলনা, যশোর, ফরিদপুরসহ দক্ষিণের দিকের যাত্রীও কম নয়।

আমিনবাজার : সকাল আটটার দিকে গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো প্রথমেই থমকে যায় এ জায়গাটিতে। তবে এরপর সেখানে যানজট হালকা হয়ে যায়। সারা দিন ধরতে গেলে ফাঁকাই ছিল।

নবীনগর : বেলা ১১টায় দেখা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নবীনগর পর্যন্ত যানবাহন চলেছে ধীরগতিতে। সাভার ট্রাফিকের পরিদর্শক আবুল হোসেন বলেন, সকাল ছয়টা থেকে আটটা পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বিশমাইল, সাভার সেনানিবাস এলাকায় তিনটি যানবাহন বিকল হয়। এ কারণে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। নবীনগরের মোড়ে বেশ কটি বাসের টিকিট কাউন্টার। এখানে তাই এসব বাস থামে। সে কারণে এখানে যানজট সৃষ্টি হয়। গাবতলী থেকে উত্তরবঙ্গের সব গাড়ি এবং আরিচা ও পাটুরিয়াগামী গাড়িগুলোকে এ পথ দিয়েই যেতে হয়। বড় এলাকায় তাই জট সৃষ্টি হয়।

বাইপাইল : মহাখালী থেকে আবদুল্লাহপুর হয়ে টাঙ্গাইল বা উত্তরবঙ্গগামী গাড়িগুলো জামগড়া, জিরাব পার হয়ে বাইপাইল আসে। আবার নবীনগর থেকে গাড়িগুলোও এ পথে যায়। আজ সকাল থেকে এখানে এসে অনেক গাড়িই শ্লথ হয়ে গেছে।

চন্দ্রা : ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রার চন্দ্রা ও আশপাশের বাসস্ট্যান্ডগুলোতে ভোর থেকে শত শত যাত্রী যানবাহনের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে ঢাকা থেকে বাসগুলো ভর্তি হয়ে আসায় ছাদেও তিলধারণের জায়গা নেই। কোনাবাড়ী হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হোসেন সরকারের ভাষ্য, গতকাল বৃহস্পতিবারের মতো আজ সকালেও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক। কোনাবাড়ী, চন্দ্রার পর কিছু এলাকায় ধীরগতিতে যান চলছে। গাড়ির বেশি চাপের কারণে এমনটা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তাঁর ভাষ্য, আবহাওয়া ঠিক থাকলে ঘরমুখী মানুষ নির্বিঘ্নে যেতে পারবে। বিকেলের দিকে যাত্রীদের চাপ কিছুটা বাড়বে।

গোড়াই : ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুরের যেখানে যানজটের আশঙ্কা বেশি সেখানে আজ তেমন ছিল না। এর কারণ এই শিল্প এলাকায় তৈরি পোশাকশিল্পের কারখানাগুলোর সব কটিতে এখনো ছুটি হয়নি। তবে যেগুলো ছুটি হয়েছে, সেসব কারখানার কর্মীরা বাড়ি যাওয়ার জন্য রাস্তার পাশে বাসের অপেক্ষায়। তবে ধেরুয়াতে যখন ট্রেন চলে তখন মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যায়। আর এর ফলে সাময়িকভাবে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে। দিনে ২৬ বার এমনটা হয়। আজ গাড়ির চাপ বাড়লে এটি হতে পারে যানজটের একটি বড় এলাকা।

টঙ্গী : ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ মহাসড়কে আবদুল্লাপুর পার হয়ে টঙ্গী থেকে গাজীপুরের ভোগড়া পর্যন্ত যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। তবে কোথাও দীর্ঘ যানজট নেই।

সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী : ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, বরিশাল, শরীয়তপুর, মাদারীপুর এলাকার যাত্রীরা ভিড় জমান সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী টার্মিনালে। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সায়েদাবাদে তেমন ভিড় ছিল না। বাসের জন্য গতকালের মতো খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি্। যাত্রবাড়ীতে ছিল মাওয়া ঘাটের যাত্রীদের ভিড়। এখানে বাসের যাত্রীদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। পুরো টার্মিনালে ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে্। যাত্রাবাড়ী মোড়ে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। তাই সেখান থেকে যাত্রী ওঠানোর জন্য বাস থামানো এবং এর ফলে যানজটের চিরাচরিত চিত্রটি আজ নেই।

মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে রাজারহাট পর্যন্ত চার কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে আজ শুক্রবার সকাল থেকে। বেলা তিনটার পর কমতে থাকে।
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে যানজট শুরু হয়ে ধীরে ধীরে মহাসড়কের রাজারহাট এলাকা পর্যন্ত পৌঁছে।