মাংসের দাম লাগামহীন

গরুর নামে মহিষ আর বা গরু, যাই কিনুন না কেন ঈদের আগের দিন বাজারে গেলে মেজাজ খারাপ হতেই পারে। ৫৫০ টাকা কেজি দরের নিচে মাংস মিলছে না কোথাও। সেই তুলনায় বরং সুপার শপগুলো দিচ্ছে ছাড়। তারা ৫১০ বা ৫২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে গরুর মাংস।

আর খাসির মাংস? সে তো আরও দামি। ৮০০ টাকাও দাম চাইছেন বিক্রেতারা। তাও সেটা খাসি নাকি বকরি সেটা নিশ্চিত নয়। আবার খাসি নামে বিক্রি হচ্ছে ভেড়াও।

মহিষের নামে গরু আর খাসির নামে বকরি বা ভেড়ার মাংস বিক্রির প্রতারণা পুরনো। এ নিয়ে অভিযোগও এখন মানুষ করে না। কিন্তু দাম নিয়ে আছে অসন্তোষ।

এক বছর আগেও গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা কেজি। আর খাসির মাংস পাওয়া গেছে ৬০০ টাকার নিচে। কিন্তু মাস দুয়েক আগে হঠাৎ ধর্মঘট করে দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়। তখন গরুর মাংস বিক্রি হতে থাকে ৫০০ টাকা কেজি দরে।

প্রতি রোজায় মাংসের দাম বেঁধে দেয় সিটি করপোরেশন। আর এবার এই দাম বেঁধে দেয়ার ক্ষেত্রে মাংস ব্যবসায়ীরা যে ধর্মঘট করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, সেটা এক অর্থে মেনে নিয়ে দাম বাড়ানোর বৈধতা দিয়ে দেয় নগর কর্তৃপক্ষ।

পয়লা রমজান থেকে ২৭ রমজান পর্যন্ত গরু, খাসি ও মহিষের মাংসের দাম বেঁধে দিয়েছিল সিটি করপোরেশন। তারা গরুর মাংস ৪৭৫, মহিষের মাংস ৪৪০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রির নির্দেশনা দেয়।

মাংস বিক্রেতারা এই নির্দেশনা মেনেছে কমই। কিন্তু কাউকে এ জন্য সাজা পেতে হয়নি। আর সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত দামে বিক্রির সময় সীমা শেষ হওয়ার পর দামে বাড়বাড়ন্ত দেখে ক্রেতারা ক্ষুব্ধ, কিন্তু যেন বলার কিছু নেই। কেজি প্রতি ৭৫ বা ১০০ টাকা বেশি দিতে বাধ্য তারা।

গরুর মাংস কোথাও নেয়া হচ্ছে ৫৫০ টাকা, কোথাও বা ৬০০ টাকা। খাসির মাংস কোথাও নেয়া হচ্ছে ৭৫০ টাকা, কোথাও বা ৮০০ টাকা।

বেড়েছে মুরগির দামও। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এটি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে। সোনালিকা বা পাকিস্তানি কর্ক বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে। দেশি মুরগিতে যেন মধ্যবিত্তের হাত দিনেও মানা। কেজি প্রতি ৪০০ টাকা বা তার চেয়ে বেশি দাম চাইছেন বিক্রেতারা।

কাপ্তান বাজার মাংস ব্যবসায়ী শুক্কুর আলী ঢাকাটাইমসকে জানান, ‘ঈদকে সামনে রেখে মাংসের দাম বাড়ছে। রোজার মধ্যে আমরা গরুর মাংস ৫০০ টাকায় বেচছি। এহন ঈদ বইল্যা ২০ থাইক্যা ৫০ টাকা বেশি নিতাছি।’

যাত্রাবাড়ী থেকে কাপ্তান বাজারে মাংস কিনতে এসেছেন ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ‘দিন দিন মাংসের দাম বৃদ্ধিই পাচ্ছে। রোজার এক মাস আগেও মাংস কিনেছি ৪২০ টাকায়। পরে রোজায় কিনতে হয়েছে ৫০০ টাকায়। এখন আরো বাড়ানো হল। এখন বিক্রি করা হচ্ছে ৫৫০ টাকায়।

এত দামে কেনেন কেন-জানতে চাইলে ইসমাইল বলেন, ‘ঈদে ভাল খাবার কে খেতে না চায়। আর সব দোকানেই এক দশা। কসাইরা সব একজোট। আমরা ক্রেতারাই জোটহীন। আমরা ঠকার দলে একা একা।’