মাগুরা ডিসি অফিসে চাকুরি দেবার নামে এমপির এপিএস এর উৎকোচ আদায়ের চেষ্টা

মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিরাপত্তা প্রহরী পদে চাকুরি দেয়ার নামে মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্যের সহকারী একান্ত সচিব পরিচয়ে ৫ লক্ষ টাকা উৎকোচ আদায়ের চেষ্টা করেছে আইনুল হক নামে এক ব্যক্তি।

এ বিষয়ে মাগুরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজমুল হক জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা প্রহরী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর মোট ১৪টি পদে দরখাস্ত আহŸান করা হয়। যার বিপরীতে মোট ১০২৪টি আবেদন পত্র জমা হয়। গত শুক্রবার ও শনিবার এসব প্রার্থীদের পদ অনুযায়ী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগকারী মাগুরা সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের মামুনুর রহমান নিরাপত্তা প্রহরী পদে আবেদন করেন। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এসব নিয়োগ শতভাগ স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে মৌখিক পরীক্ষার সময় প্রত্যেককে নানা ধরনের প্রশ্ন করা হয় ও কৌশল অবলম্বন করা হয়। যার এক পর্যায়ে মামুনুর রহমান মাগুরার এমপি’র এপিএস পরিচয়দানকারী জনৈক আইনুল হককে ৫ লক্ষ টাকার চেক দেবার তথ্য উপস্থাপন করেন। পরে ঘটনাটি তদন্ত করে ওই চেকের ফটোকপি ও মামুনুর রহমানের সাথে ঐ আইনুল হকের কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড পাওয়া যায়। তাদের দুজনের কথোপকথনে মাগুরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিরাপত্তা প্রহরী পদে চাকুরি দেবার জন্যে এমপি’র এপিএস পরিচয়দানকারী ওই আইনুল হকের নানামুখী আলোচনা আছে। যা থেকে চাকুরি দেয়ার নামে অগ্রণী ব্যাংক মাগুরার হাজীপুর শাখার ৫ লক্ষ টাকার একটি চেক গ্রহণের তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে মাগুরা জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি ও সফল হয়েছি। অভিযোগকারী মামুনুর রহমান যোগ্যতার ভিত্তিতেই নিরাপত্তা প্রহরী পদে নিয়োগ পাবার জন্য মনোনীত হয়েছে। তবে এই চাকুরি বাবদ কারো সাথে কোন আর্থিক লেনদেন হয়েছে কিনা সেটি যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে প্রার্থী মামুনুর রহমানের কাছ থেকে ওই তথ্য বেরিয়ে আসে। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি মাগুরা পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এটিএম আব্দুল ওয়াহ্হাব বলেন, ‘আইনুল হক নামে আমার একজন এপিএস আছে। তবে আমি তাকে কখনোই কোন নিয়োগ সংক্রান্ত দায়িত্ব দেইনি। সে কোন অনৈতিক কাজ করলে সেটির ব্যক্তিগত দায় তার নিজেরই। দলীয় নেতাকর্মীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমি নিজেই দুই বেকার যুবকের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে সুপারিশ করেছিলাম। কিন্তু তাদের চাকরী হয়নি। কোন কাজে স্বচ্ছতা ও সততার পরিচয় যদি কেউ দেয় সেটি অবস্যই প্রশংসনীয়। চাকুরীর ক্ষেত্রে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগকে আমি সব সময় সাধুবাদ জানাই’।

এদিকে অভিযুক্ত আইনুল হক এ বিষয়ে বলেন, ‘ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকুরী দেবার কথা বলে কোন চুক্তি কারো সাথে আমার হয়নি। কেউ যদি এধরনের অভিযোগ দিয়ে থাকে সেটি মিথ্যা’।