মাটি খুঁড়ে বেড়িয়ে এল হীরা!

পতিত জমির মাটি খুঁড়তে গিয়ে মহামূল্যবান হীরার টুকরা পেয়েছেন এক গরিব কৃষক। গল্প নয়। নিজের ভাগ্যটাকেই এবার বদলাতে চলেছেন তিনি। কারণ, মাটি খুঁড়ে তিনি যে হীরার টুকরাটি পেয়েছেন, তার মূল্য অন্তত ১৮ লাখ টাকা (১৫ লাখ রুপি)। গত সপ্তাহে ভারতের মধ্যপ্রদেশে বুন্দেলখান্ডের পাতি কৃষ্ণ কল্যাণপুরে এই ঘটনা ঘটে।

আজ শনিবার ভারতের শীর্ষ গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, হীরার টুকরা পাওয়া ওই কৃষকের নাম সুরেশ যাদব (৪০)। রত্নপাথরের গুণসম্পন্ন হীরার টুকরাটির ওজন ৫ দশমিক ৮২ ক্যারেট।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বুন্দেলখান্ডের পাতি কৃষ্ণ কল্যাণপুরে হীরার খনি আছে। এই এলাকায় মাঝে মাঝেই মাটি খুঁড়ে হীরা পাওয়ার কথা শোনা যায়। সেখানে জেলা প্রশাসন সাধারণ মানুষকে ২৫০ রুপির বিনিময়ে ৬৪ বর্গমিটার জমি ইজারা দেয়। ওই জমি ইজারা নিয়ে হীরার সন্ধানে খোঁড়াখুঁড়ি। কারও ভাগ্যে জোটে, কারও ভাগ্যে জোটে না। ভাগ্যের সন্ধানে ওই এলাকায় হতদরিদ্র কৃষক সুরেশও জমি ইজারা নিয়েছিলেন। সেখানেই মাটি খুঁড়ে তিনি ওই হীরার টুকরাটি পান।

সুরেশ যাদব বলেন, ‘চাষবাস করে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। এখন চাষাবাদের পরিবেশও নেই আর। তাই গত বছর নিজের এক খণ্ড জমি ছেলেকে দিয়ে দিই। সিদ্ধান্ত নিই, পাতি কৃষ্ণ কল্যাণপুরে জমি ইজারা নিয়ে হীরার খোঁজে খোঁড়া শুরু করব। এতে ভাগ্য ফিরলেও ফিরতে পারে। ব্যস, জমি ইজারা নিয়ে কাজ শুরু করে দিলাম। দিনে অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করতাম। আর সকাল ও রাতে চলত হীরার জন্য খোঁড়াখুঁড়ি।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, এভাবে ৬৪ বর্গমিটার জমি খুঁড়তে খুঁড়তে গত সপ্তাহে এক খণ্ড পাথর হাতে আসে সুরেশের। কিন্তু নিছক পাথর ভেবে তা তিনি ফেলে দেননি। হীরা বিশেষজ্ঞদের দেখালে তাঁরা বলেন, এই পাথর খণ্ড আসলে ৫ দশমিক ৮২ ক্যারেট ওজনের সবচেয়ে ভালো হীরার খণ্ড। যার মূল্য ১৫ থেকে ২০ লাখ রুপি পর্যন্ত হতে পারে।

জেলার খনিবিষয়ক কর্মকর্তা সন্তোষ সিং বলেন, বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সুরেশের পাওয়া হীরা খুবই উন্নত মানের। এখন সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ওই হীরা নিলামে তোলা হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এভাবে কেউ হীরা খুঁজে পেলে তা তিনি নিয়ে যেতে পারেন না। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ওই হীরা জেলা হীরা কর্মকর্তার কাছে জমা রাখতে হয়। তিনি তা নিলামে তোলেন। এ থেকে যে দাম পাওয়া যাবে, তার ১১ দশমিক ৫ শতাংশ রাষ্ট্র রেখে দেবে। আর বাকি অর্থ ওই হীরা খুঁজে পাওয়া ব্যক্তিকে দিয়ে দেওয়া হবে। যদি নিলামে কেউ ওই হীরা না কেনেন, তাহলে হীরা খুঁজে পাওয়া ব্যক্তি প্রত্যাশিত দামের ১১ দশমিক ৫ শতাংশ রাষ্ট্রকে দিয়ে পুরো হীরা নিয়ে নিতে পারবেন। সে হিসাবে প্রায় ১৬ লাখ টাকার মালিক হয়ে দরিদ্র পরিবারের ভাগ্য ফেরাতে যাচ্ছেন সুরেশ যাদব।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৫ সালে ওই একই এলাকায় অনন্ত সিং যাদব নামের এক ব্যক্তি ১২ দশমিক ৯৩ ক্যারেট ওজনের হীরা পেয়েছিলেন। জেলা হীরা কর্মকর্তা ওই হীরার প্রতি ক্যারেটের দাম ধরেছিলেন দুই লাখ রুপি।