মায়ের সামনেই আলমারি চাপায় ছেলের মৃত্যু

স্কুল লাইব্রেরিতে বই নিতে গিয়ে আলমারি চাপায় মায়ের সামনেই মারা গেল সন্তান। নিহত শিশু শিক্ষার্থীর নাম জয়দ্বীপ দত্ত (১২)। মা মিন্টু দত্ত।

রোববার বেলা ২টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালির পাথরঘাটায় সেন্ট প্লাসিডস স্কুলে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। জয়দ্বীপ পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। মা মিন্টু দত্ত একই স্কুলের লাইব্রেরি ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত।

এ ঘটনায় গোটা স্কুলে শোকের ছায়া নেমে আসে। জয়দ্বীপের বাবা দেবাশীষ দত্ত ক্রেডিট আনোয়ারা মিশনারি স্কুলের শিক্ষক। দুই ছেলে নিয়ে এ শিক্ষক দম্পতি নগরীর ফিরিঙ্গিবাজার এলাকার হাজী কলোনিতে বসবাস করেন।

ঘটনা শোনার পর স্বজন-সহপাঠীরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ভিড় জমান। তাদের আর্তনাদ-আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। আলমারি চাপায় এ অবোধ শিশুর মৃত্যু কেউই সহজে মেনে নিতে পারছেন না।

জয়দ্বীপের কাকা দেবদাস দত্ত বলেন, প্রতিদিনের মতো রোববারও মা মিন্টু দত্তের হাত ধরে স্কুলে গিয়েছিল জয়দ্বীপ। ওই স্কুলের লাইব্রেরিতে মা মিন্টু দত্তের কর্মস্থল।

মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরতে অপেক্ষা করছিল জয়দ্বীপ। কিন্তু দায়িত্ব শেষ করা পর্যন্ত সময় পার করতে একটি গল্পের বই পড়তে দেখিয়ে দেন মা মিন্টু দত্ত।

বইটি নিতে গেলে জয়দ্বীপের ওপর কাত হয়ে পড়ে বইভর্তি আলমারি। সঙ্গে সঙ্গে মা মিন্টু দত্ত চিৎকারে করে আলমারির নিচ থেকে জয়দ্বীপকে বের করার চেষ্টা করেন। একা উদ্ধার করতে না পেরে চিৎকার দেন।

আশপাশের কক্ষ থেকে অন্য শিক্ষক-কর্মচারীরা ছুটে এসে জয়দ্বীপকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু এর আগেই জয়দ্বীপের দেহ নিথর হয়ে পড়ে।

চমেক হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎকরা জয়দ্বীপকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে নিজের চোখের সামনে আলমারি চাপায় সন্তানের মৃত্যুর মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন মা মিন্টু দত্ত।

চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জহিরুল হক ভুঁইয়া যুগান্তরকে জানান, স্কুল লাইব্রেরিতে আলমারি চাপা পড়ে গুরুতর আহত হয় জয়দ্বীপ। চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।