মুক্তামনির হাতের মাংসপিণ্ডের ওজন ৩ কেজি

বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনির হাতের রক্তনালীর টিউমার অপারেশন করে তা বায়োপসির জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে কতদিন পর রিপোর্ট আসবে তা জানাতে পারেননি অপারেশনের অংশ নেওয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. তানভীর আহমেদ।

তিনি জানান, টিউমারসহ হাতের যে মাংসপিণ্ডটি অপসারণ করা হয়েছে তার ওজন ৩ কেজি।

এর আগে সকাল ৮টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার শুরু করেন। অস্ত্রোপচার শেষে বেলা সোয়া ১১টায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।

এরপর মুক্তামনির অস্ত্রোপচার পরবর্তী অবস্থা জানাতে গিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিদের ব্রিফ করা হয়। ব্রিফিংয়ে ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনির হাতের মাংসপিণ্ড সফলভাবে অপসারণ করা হয়েছে। তবে এখনই তাকে ঝুঁকিমুক্ত বলা যাচ্ছে না। পর্যায়ক্রমে আরো ৫-৬টি অস্ত্রোপচার করা লাগবে।’

সাতক্ষীরার সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের মুদি দোকানি ইব্রাহীম হোসেনের মেয়ে মুক্তামনি (১২)। জন্মের দেড় বছর পর মুক্তামনির হাতে একটি ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। এরপর থেকে সেটি বাড়তে থাকে।

দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়েও তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। তার আক্রান্ত ডান হাত এখন ছোট আকারের গাছের গুড়ির রূপ নিয়ে প্রচণ্ড ভারী হয়ে উঠেছে। এতে পচনও ধরেছে। পোকাও জন্মেছে। দিন রাত চুলকানি ও যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে থাকে মুক্তামনি। আক্রান্ত স্থান থেকে বিকট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

এ রোগ তার দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। এসব কারণে তাদের বাড়িতে আত্মীয় স্বজন ও পড়শিদের যাতায়াতও এক রকম বন্ধ হয়ে গেছে।

সম্প্রতি মুক্তামনির এ বিরল রোগ নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

গত ১১ জুলাই মুক্তামনিকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে ৬০৮ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের অপারেশন থিয়েটারে শনিবার (৫ আগস্ট) তার বায়োপসি সম্পন্ন হয়। বায়োপসি রিপোর্টে তার রক্তনালীতে টিউমার ধরা পড়ে। যা অপসারণ করা হয়েছে।