মেয়ের মৃত্যু রহস্য খুঁজতে এসে বিয়ে করলেন মডেল রাউধার বাবা

নীল নয়না মডেল কন্যা রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রাউধা আতিফের বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ বিয়ে করেছেন। মালদ্বীপ থেকে মেয়ের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে এসে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি রাজশাহী কোর্টে এফিডেভিট করে কণকলতাকে (৩০) বিয়ে করেন। রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পিল্লাপাড়া এলাকার বদিউজ্জামানের মেয়ে কনকলতা। বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর ডা. মোহাম্মদ আতিফ লক্ষ্মীপুরে প্যারামেডিকেল কলেজের সামনে তার স্ত্রীর ভাড়া বাড়িতে উঠেছেন। সেখানেই তিনি এখন থাকবেন। রাউধার বাবার বিয়ের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের কেউ জানেন না।

জানা গেছে, কণকলতা বিভিন্ন ধরনের মডেলিং করে থাকেন। একসময় থাকতেন ঢাকায়। রাউধার বাবা মোহাম্মদ আতিফ রাজশাহীতে থাকার সুবাদে পরিচয় ঘটে কণকলতার বাবা বদিউজ্জামানের সাথে। মাঝে মধ্যে তিনি বদিউজ্জামনের বাসায় যেতেন। সেই সুবাদে রাজশাহীতে তার পরিচিত একজন সাংবাদিকের মাধ্যমে কণকলতার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এতে কণকলতার বাবা রাজি হন। এর আগে বিয়ের জন্য কয়েকবার চেষ্টা করলেও হয়নি। অবশেষে বৃহস্পতিবার তিনি বিয়ে সম্পন্ন করেন।

এদিকে মেয়ের মৃত্যুর রহস্য খুঁজতে এসে তার বিয়ের বিষয়টি কতটুকু বৈধ তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এছাড়াও তার ঘরে আরো দুই ছেলে মেয়ে থাকার পরও বিয়ের ব্যাপারটি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বর্তমান স্ত্রী থাকার পর অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করতে হলে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি লাগে। সেই অনুমতি আছে কি না সে ব্যাপারেও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। কারণ রাউধার মৃত্যুর পর তার মা ভাই বাংলাদেশে আসলেও তিন দিন পর তারা চলে যান। এরপর ডা. মোহাম্মদ আতিফ মালদ্বীপে না ফিরে রাজশাহীতেই থেকে যান।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতেখায়ের আলম জানান, বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছেন। তবে বিদেশি একজন ব্যক্তি অতিথি হিসেবে এসে চাইলে তিনি বিয়ে করতে পারবেন কি না এমন প্রশ্নে উত্তরে তিনি বলেন হয়ত আইন থাকলেও থাকতে পারে। তবে দূতাবাস থেকে তিনি বিয়ের ব্যাপারে কোনো অনুমতি নিয়েছেন কি না সেটা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। আর তিনি যদি অনুমতি না নেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

২৯ মার্চ রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেলের ২০৯ নম্বর কক্ষ থেকে মডেল কন্যা রাউধার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন রাতে শাহমখদুম থানায় কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি অপমৃত্যুর মামলা করে। পরে রাউধার বাবা আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুনঃময়নাতদন্তের জন্য তার লাশটি মহানগরীর হেতেমখাঁ গোরস্থান থেকে উঠানোও হয়। মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রাউধা মারা যাওয়ার খবর পেয়ে পরেরদিন রাজশাহীতে আসেন তার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ। এর পর থেকেই তিনি রাজশাহীতে রয়েছেন।