যমুনায় বাড়ছে পানি, বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ

পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে জামালপুরে যমুনার পানি বেড়েই চলছে। ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। বন্যা কবলিত এলাকায় পানি বাড়ার সাথে সাথে বেড়েছে দুর্ভোগ। সারা জেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২ লাখ মানুষ।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান জানান, যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বাড়ি ঘর পানিতে ডুবে যাওয়ায় ভানবাসীরা ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। তারা আশ্রয় নিচ্ছে উঁচু স্থানে বাধে ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মেলান্দহ-মাহমুদপুর, ইসলামপুর-গুঠাইল, গুঠাইল-উলিয়াসড়কসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো ডুবে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কলার ভেলা ও নৌকা দিয়ে চলাচল করছে বন্যা দুর্গতরা।

এদিকে বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা চোখে পড়েনি। আর তাই দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট। ত্রাণের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে ভানবাসীদের মধ্যে। দুর্গত এলাকাগুলোতে জ্বর, ঠাণ্ডাসহ পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এখনও দুর্গত এলাকায় পৌঁছেনি মেডিকেল টিম। শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইনের দ্রুত পৌঁছানোর দাবি জানিয়েছে পারিবন্দি মানুষগুলো।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, সারা জেলায় ১৬১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৬০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মিলে ২২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা শিক্ষা অফিস।

এদিকে বন্যার পানিতে ৭৭ হেক্টর রোপা আমনের বীজতলা, ১৩৩ হেক্টর আউস ধান, ৪৫০ হেক্টর সবজি ক্ষেতসহ কয়েক’শ হেক্টর পাটক্ষেত তলিয়ে গেছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে। চারপাশে পানি উঠায় গো খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

জেলা প্রশাসক আহমেদ কবির জানান, ১৩০ মেট্রিকটন চাল, ২ লাখ ২০ হাজার নগদ টাকা ও ৩ হাজার ২’শ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। আরো মজুদ রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় দুর্গত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে।

তবে জেলা প্রশাসনের বরাদ্দকৃত ত্রাণ দুর্গত এলাকায় চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল। ধীর গতিতে ত্রাণ তৎপরতা চলায় খাদ্যের অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পানিবন্দি মানুষেরা।