যেভাবে অপসারিত হয়েছে ভাস্কর্যটি

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২ টার পর হঠাৎ করেই কোনো ঘোষণা ছাড়াই সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত গ্রিক দেবী থেমিসের আদলে নির্মিত ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু হয়। প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় অপসারণ করা হয় ভাস্কর্যটি। বর্তমানে অপসারণ করা ভাস্কর্যটি সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের পানির পাম্পের পাশে নীল রঙা ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।

প্রায় একবছর আগে ভাস্কর মৃণাল হকের তৈরি করা সুপ্রিম কোর্টের সামনে দেবী থেমিসের মূর্তিটি সরাতে ৬ থেকে ৭ জন শ্রমিক হাতুর বাটালের আঘাত করে। এর কিছুক্ষণ পর মৃণাল হকের নেতৃত্বে ১৩ জন কর্মী এসে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় এবং ভাস্কর্যটির ভিত ভাঙার কাজ শুরু করেন।

ঘটনার কিছুক্ষণ পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মৃণাল হক। তিনি বলেন, আমার কিছু বলার নেই। অনেকের অনেক ক্ষমতা আছে। আমি বানিয়েছি, আমাকে সরাতে বলা হয়েছে। তাই আমি তদারকি করছি। তবে ভাস্কর্য সরিয়ে হয়তো অ্যানেক্স ভবনের সামনে স্থাপন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, ভাস্কর্য অপসারণ করার পর সুপ্রিম কোর্টের সামনে বিক্ষোভ করেন গণজাগরণ মঞ্চের একাংশের কর্মী, ছাত্র ইউনিয়ন, উদীচীসহ আরও কিছু ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

প্রসঙ্গত: ২০১৬ সালের শেষ দিকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্যটি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়। এরপর প্রায় দুই মাস এ বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কোনও মত প্রকাশ না হলেও ফেব্রুয়ারিতে মুখ খোলেন হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফী। এক বিবৃতিতে তিনি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্যটি অপসারণের দাবি জানান।

এই ধারাবাহিকতায় গত ১১ এপ্রিল গণভবনে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সরকারি স্বীকৃতি ঘোষণার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই প্রশ্ন তোলেন গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য নিয়ে। সুপ্রীম কোর্ট চত্বরে এই গ্রিক দেবী থাকা উচিৎ না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।