যে প্রতিযোগিতায় বিচারের মাপকাঠি দাতব্য কর্মকাণ্ড

মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি : গতকাল সন্ধ্যায় আমার সৌভাগ্য হয়েছিল ফিলিপাইনের একটি চ্যারিটি প্যাজেনট গ্র্যান্ড ফিনালেতে বিচারক এর দায়িত্ব পালন করার (Ms Lumad NGA Bisaya Ireland 2017)। চ্যারিটি প্যাজেনট আর বিউটি প্যাজেনট এর মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

এই প্যাজেনট এর বিশেষত্ব হলো, এইখানে বয়স, ম্যারিটাল স্ট্যাটাস, শারীরিক গঠন বা বাহ্যিক সৌন্দর্য দিয়ে প্রতিযোগীদের বিচার করা হয়না। বিচার করা তাদের সামাজিক ও দাতব্য কর্মকাণ্ডের উপর।
টপ আটজন প্রতিযোগী ফিলিপাইনের আটটি অঞ্চল/স্টেটকে প্রতিনিধিত্ব করেছে এবং আট জনেরই ভিন্ন ভিন্ন প্রোজেক্ট রয়েছে। নিজ নিজ এলাকায়, কে কিভাবে তার অঞ্চলকে সুবিধাবঞ্চিত অসহায় মানুষদের সাহায্য করবে, পাশে দাঁড়াবে, সেই অনুযায়ী তারা তিন মাস ধরে বিভিন্ন কার্যক্রম এর মাধ্যমে ফান্ড সংগ্রহ করেছে। যে সবচেয়ে বেশী করতে পেরেছে তার নাম্বার ছিল সবচেয়ে এগিয়ে।

মানুষ বিনোদন পেতে ভালোবাসে আর সাথে প্রচারও। সেই কথাই মাথায় রেখে গ্র্যান্ড ফিনালেতে চূড়ান্ত প্রতিযোগীগণ ছয়টি রাউনড এ বিভিন্ন সাঁজে, নাচে ও গানে তাদের উপস্থাপন করে দর্শকদের বিনোদন দেন ঐ টপ আট প্রতিযোগীরা। আর দর্শকগণ যারা টিকেট কিনে এই অনুষ্ঠান দেখতে এসেছেন, তাদের টাকা চলে যাবে এই চ্যারিটি ফাউন্ডেশনে, যারা বিভিন্ন প্রোজেক্ট এর মাধ্যমে ফিলিপাইনে ঝড়, টাইফূন বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে কবলিত মানুষদের বাড়ি, স্কুল, খাদ্য, ঔষধ ইত্যাদি দিয়ে সাহায্য করে এবং তাদের হিসাব- নিকাশ থাকে স্বচ্ছ।

এক অর্থে আমি বলবো, চ্যারিটি অর্গানাইজেশনও কারও থেকে ফ্রি টাকা নিচ্ছে না তাদের সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য।

মানুষদের বিনোদন দিচ্ছে আবার সেই টাকা কাজে লাগাচ্ছে মানুষেরই জন্য। আর সেই বিনোদন দেয়ার সঙ্গীরা থাকেন, যারা স্বেচ্ছায় চান মানুষদের উপকার করতে নিজের দেশের জন্য, নিজের কমিউনিটির জন্য।
** মানুষের বেঁচে থাকার জন্য মৌলিক চাহিদার পর বিনোদন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিনোদন হতে পারে খেলা দেখে, মুভি দেখে, ঘুরতে বেড়িয়ে, কোন রকম ‘শো দেখে, যার যেমন রুচি। আপনার আর আমার রুচি না মিললেই যে, আমারটা খারাপ রুচি সেই উপলব্ধি থেকে বের হয়ে আসা জরুরী।

(প্রিয়তির ফেসবুক পেইজ থেকে সংগৃহীত)