রক্তের বন্ধন ভেঙে দিলো ধর্মের বন্ধন

ধর্মের জোরের চেয়ে যে রক্তের বন্ধন আরও দৃঢ় তা ফের প্রমাণিত হল। এক মুসলিম মহিলা এবং এক হিন্দু মহিলা পরস্পরের স্বামীর জীবন বাঁচালেন পরস্পর কিডনি দান করে। অভূতপূর্ব এই ঘটনার সাক্ষী ভারতের রাজধানী দিল্লির নয়ডা শহরের জেপি হাসপাতাল।

নয়ডার ওই হাসপাতালে ছিলেন কিডনির অসুখে গ্রেটার নয়ডার বাসিন্দা আকরাম এবং বাঘপতের বাসিন্দা রাহুল বরিষ্ঠ। ২৯ বছরের একরামের রক্তের গ্রুপ এ পজিটিভ এবং ২৬ বছরের রাহুলের শরীরে বি পজিটিভ রক্ত। রক্তের গ্রুপ না মেলায় দু’‌টি পরিবারই কোনও কিডনি দাতা পাচ্ছিলেন না। ফলে দুই যুবকেরই জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছিল।

হাসপাতালের কিডনি প্রতিস্থাপন বিভাগের শল্য চিকিৎসক অমিত দেওরা বলেন, এমতাবস্থায় দু’‌টি পরিবারকে নিয়ে পৃথকভাবে আলোচনায় বসেন তারা। কারণ আকরামের স্ত্রী রাজিয়ার শরীরে বি পজিটিভ রক্ত এবং রাহুলের স্ত্রী পবিত্রার রক্ত এ পজিটিভ। তারা পরামর্শ দেন, দুই মহিলা যদি পরস্পরের স্বামীকে তাদের কিডনি দান করেন, তাহলে দু’‌জনের স্বামীরই প্রাণ বাঁচানো সম্ভব।

সানন্দে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে নেয় দু’‌টি পরিবারই। তারপরই দুই যুবকের অস্ত্রোপচার করা হয়। টানা ৫ ঘণ্টার অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সোমবার চিকিৎসার সাফল্যের কথা জানিয়ে জেপি হাসপাতালের সিইও মনোজ লুথরা।

মনোজ লুথরা বলেন, এই ঘটনাই প্রমাণ করছে, রক্তের কোনও প্রতিবন্ধকতা হয় না। সঙ্কীর্ণতা, ভেদাভেদ, সবই মানুষের মনের তৈরি ধর্মবিশ্বাস থেকে আসে। জাতপাতের পরিবর্তে মানবতাকে প্রাধান্য দিলে কয়েক হাজার মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব বলে মনে করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।