রোহিঙ্গাদের তথ্য দিতে ওয়েবসাইট করবে মিয়ানমার

মিয়ানমার সরকার ও দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে দশ লাখের মতো রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ বিষয়টিকে দেখঝে জাতিগত নির্মূল হিসেবে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই বাড়ছে।

এই চাপের মুখে নতুন কথা জানিয়েছে দেশটির ডি-ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া বক্তব্যে ঘোষণা দিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনতে ঢাকার সঙ্গে আলোচনা চলছে। রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তথ্য দিতে ও সর্বশেষ বিষয়ে জানাতে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবে মিয়ানমার সরকার।

সেখানে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ ও বিভিন্ন তথ্য থাকবে বলে সু চি উল্লেখ করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার(১২ অক্টোবর) অং সান সু চি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক বক্তব্য দেন রাখাইন ও রোহিঙ্গাদের নিয়ে।

সেখানে সু চি বলেছেন, আপনারা সবাই জানেন রাখাইন ইস্যুতে বিশ্বের মনোযোগ ছিল ব্যাপক। গত বছর অক্টোবরে পুলিশ ফাঁড়িতে সন্ত্রাসী হামলার মধ্য দিয়ে যার শুরু। চলতি বছর আগস্টে আবারও একই ধরনের হামলা ঘটেছে। এই হামলার পর থেকে সংশ্লিষ্ট একাধিক সমস্যার জন্ম হয়েছে। আমাদের দেশের বিরুদ্ধে অনেক সমালোচনা হচ্ছে।

আমাদের আন্তর্জাতিক মত বুঝতে হবে। যদিও, কারও পক্ষেই আমাদের দেশের পরিস্থিতি বুঝতে পারা সম্ভব নয়। আমাদের দেশের শান্তি ও উন্নয়ন আমাদের চেয়ে কেউ বেশি চাইতে পারে না। তাই এ সব সমস্যা আমাদের একতার শক্তি দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিবৃতিতে সু চি আরও বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের দেশের উচিত যা করা প্রয়োজন তা চালিয়ে যাওয়া। অধিকন্তু তা করতে হবে সঠিক, সাহসিকতা ও কার্যকরভাবে। উন্নতি ও সফলতা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা বাস্তবায়ন করে যাব। সমালোচনা ও অভিযোগের জবাব কথায় না দিয়ে আমাদের পদক্ষেপ ও কাজ দিয়ে বিশ্বকে দেখিয়ে দেব।

রাখাইনে করণীয় বিষয়ে সু চি বলেন, রাখাইন রাজ্যে আমাদের অনেক কিছুই করতে হবে। আমরা যদি করণীয় বিষয়গুলোর তালিকা করি ও অগ্রাধিকার ঠিক করি তাহলে তিনটি প্রধান করণীয় সামনে আসে। সেগুলো হলো-

প্রথমত, বাংলাদেশে যারা চলে গিয়েছে তাদের প্রত্যাবাসন ও কার্যকরভাবে তাদের মানবিক সহায়তা দেয়া। দ্বিতীয়ত, পুনরায় স্থানান্তর ও পুনর্বাসন এবং তৃতীয়ত, অঞ্চলটির উন্নয়ন ও স্থিতিশীল শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।

সু চি বলেন, বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে আনা মানুষদের পুনর্বাসন নিয়ে শুধু আমাদের কাজ করলে হবে না। রাখাইনের বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীসহ রাখাইন ও হিন্দুদের জন্যও কাজ করতে হবে। তারা যাতে স্বাভাবিক হয় তা আমরা নিশ্চিত করব।