রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র

রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ সহায়তা হিসেবে বাংলাদেশকে ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সঙ্গে বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট সাংবাদিকের বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত—একবছরে রোহিঙ্গাদের সহায়তার যুক্তরাষ্ট্র জন্য ৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার সহায়তা দিয়েছে।’ এছাড়া রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নির্যাতনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন বলেও জানান তিনি।

গৃহহীন রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ৩৫ লাখ ডলার বরাদ্দ করেছে জানিয়ে বার্নিকাট বলেন, ‘এছাড়া আশা করা হচ্ছে, ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে সাড়ে তিন কোটি ডলারের খাদ্য সাহায্য পাওয়া যাবে। আমরা মিয়ানমার সরকারকে আহ্বান করছি, তারা যেন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ঢুকতে দেয় এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো যেন সেখানে কাজ করতে পারে, তারও অনুমতি দেয়।’

মিয়ানমারে গণহত্যা হচ্ছে কিনা, এ বিষয়ে জানতে চাইলে এই রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সেখানে একটি ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে। যে নামেই ডাকা হোক না কেন, অবিলম্বে এই সংকটের সমাধান হওয়া দরকার, যেন রোহিঙ্গারা নিজের দেশে ফেরত যেতে পারে।’

গতকাল মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি একটি তদন্তের কথা উল্লেখ করেছেন, সে বিষয়ে জানতে চাইলে মার্শা বার্নিকাট বলেন, ‘আমরা এটি দেখেছি। আমি সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফর করেছি। যেকোনও ধরনের নতুন তদন্ত কফি আনান কমিশনের রিপোর্টের বাড়তি তদন্ত হবে। অং সান সু চি নিজেই বলেছেন, তিনি কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট স্বীকার করেন। আমি আশা করি, তিনি তার প্রতিশ্রুতি রাখবেন।’

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি শুধু খোলা মনে এতটুকু বলতে চাই, সু চি শুধু নিজেকে এই প্রশ্ন করতে পারেন, এত লোক নিজে থেকে এত অল্প সময়ের মধ্যে এই ভয়ঙ্কর বৃষ্টি-বাদলার সময়, কোনও প্রয়োজন না থাকলে কেন গৃহত্যাগ করলো? আমার মনে হয়, এটি প্রমাণ করে যে, ভয়ঙ্কর ও বিপজ্জনক কোনও কারণ ছাড়াই মানুষ প্রাণ হাতে নিয়ে গৃহত্যাগ করতে পারে না।’

রোহিঙ্গা সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন কিনা, জানাতে চাইলে বার্নিকাট বলেন, ‘আমরা অবশ্যই উদ্বিগ্ন। আপনারা দেখেছেন হোয়াইট হাউস, কংগ্রেস সদস্যরা এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন গতকাল সূচির সঙ্গে কথা বলেছেন। এটি একটি অত্যন্ত বড় ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে কেউ ভালো থাকতে পারে না। সমস্যার সমাধান গৃহ প্রত্যাবর্তন। এর মধ্য দিয়েই স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হবে।’

বৈঠকের বিষয়ে ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘গত ২০/২২ দিনে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ রেহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। তারা মিয়ানমারের নাগরিক। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি, তারা যেন মিয়ানমারকে চাপ দেয় রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য। রাষ্ট্রদূত আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পাশে থাকবে।’