‘রোহিঙ্গা আশ্রয় ভোটের জন্য’

মানবিকতার জন্য নয়, ভোটের জন্য রোহিঙ্গাদের সরকার আশ্রয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।

সোমবার দুপুরে এক টুইটে তিনি এ অভিযোগ করেন।

এতে লেখিকা প্রশ্ন তুলেছেন, মুসলিম না হয়ে অন্য ধর্মের হলেও কি বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিত?

রাখাইন রাজ্যে গত ২৫ আগস্ট অন্তত ৩০টি পুলিশ চৌকি ও একটি সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা’র যোদ্ধারা প্রবেশের চেষ্টা করে।

এরপর থেকে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রাখাইনে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযানের নামে নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ ও ঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে।

ইতোমধ্যে ৫ হাজারের অধিক রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। আর নির্যাতনের মুখে ৪ লাখ ১০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

এই প্রসঙ্গেই দ্বিতীয়বারের মতো তোপ দাগলেন বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তিনি টুইট করেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু, যদি রোহিঙ্গারা মুসলিম না হয়ে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কিংবা জৈন ধর্মাবলম্বী হত? তাহলে কি হত? মানবিকতার জন্য আশ্রয়দান নয়, এটা আসলে ভোটের জন্য।’

এর আগেও বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া দেন তসলিমা নাসরিন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘আপনি (শেখ হাসিনা) ভোটের জন্য সব করছেন। ভোটের জন্য রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। দেশের মুসলমানদের ভোট পাবেন। রোহিঙ্গারা যদি হিন্দু হতো বা বৌদ্ধ হতো, আপনি কি আশ্রয় দিতেন? খুব সম্ভবত দিতেন না।’

তসলিমা বলেন, ‘দেশের ভেতরেই দেশের হিন্দু নাগরিক যখন নির্যাতত হয়, নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ হয়, যখন ওদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়ে ওদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়, আপনি কি গিয়েছেন ওই নির্যাতিত হিন্দুদের কাছে? এক ফোঁটা চোখের জলও কি ফেলেছেন?’

তিনি বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠদের ভোট পাওয়ার জন্য আমাকে আমার দেশে ঢুকতে দিচ্ছেন না, সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানূভুতি দেখাচ্ছেন না, ব্লগারদের মৃত্যুতে সমবেদনাও জানাচ্ছেন না। কিন্তু, অন্য দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের জন্য আপনার আবেগ উপচে পড়ছে। ওরা মুসলমান বলেই, অনেকেই নিশ্চিত, ওরা মুসলমান বলেই। শুধু জিততে চাইছেন। শুধু শাসন করতে চাইছেন।’

তসলিমা আরও বলেন, ‘যারা ছলে-বলে কৌশলে শুধু নিজের স্বার্থটাই হাসিল করতে চায়, তাদের আমরা কতটা মুক্তকণ্ঠে মানবতাবাদী বলতে পারি!’