র‍্যাব বাংলাদেশের জন্য আল্লাহর রহমত

র‍্যাব বাংলাদেশের জন্য আল্লাহর রহমত বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রামের সাংসদ এম এ লতিফ। আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গায় র‍্যাব-৭-এর সদর দপ্তরে মাদকদ্রব্য ধ্বংস কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।

পতেঙ্গায় র‍্যাব-৭-এর সদর দপ্তরে মাদকদ্রব্য ধ্বংস কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুপুরে ৩৫ লাখ ৭০ হাজার ইয়বা, ৭ হাজার ১৮১ বোতল ফেনসিডিল, ২০০ বোতল বিদেশি মদ ও ২০০ কেজি গাঁজা ধ্বংস করা হয়। সাম্প্রতিক বিভিন্ন অভিযানে র‍্যাব-৭ এসব মাদকদ্রব্য জব্দ করে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে নির্বাচিত সাংসদ এম এ লতিফ র‍্যাবের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি র‍্যাবের একটি অর্থ ঠিক করেছি। র‍্যাব হচ্ছে রহমত অব আল্লাহ ফর বাংলাদেশ।’ অর্থাৎ বাংলাদেশের জন্য আল্লাহর রহমত।

মিয়ানমার থেকে ইয়াবা বড়ির চালান ঠেকাতে টেকনাফ ও মিয়ানমারের মাঝখানে নাফ নদীতে মাছ ধরা সাময়িক বন্ধের কথা চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইয়াবা পাচার বন্ধের জন্য আমরা নাফ নদীতে একটি প্রোগ্রাম (কর্মসূচি) নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে প্রোগ্রাম সম্পর্কে পরে ঘোষণা দেব। আমরা জেলেদের শুধু অনুরোধ করব তাঁরা যেন নাফ নদীতে মাছ ধরতে না যান। ওই সময় বিজিবি এবং কোস্টগার্ডের নজরদারিতে এসে যাবে—কারা সীমান্ত পাড়ি দেয়, কারা নদী অতিক্রম করে এবং বাংলাদেশে ইয়াবা নিয়ে আসে। তাহলে ইয়াবা নিয়ে আরও সুন্দরভাবে কাজ করতে পারবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ভারত থেকে আগে ফেনসিডিল আসত। এ বিষয়ে বন্ধু রাষ্ট্র ভারত সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা বলে আমরা কিছুটা সফল হয়েছি। ভারত বিভিন্ন সীমান্তে ফেনসিডিল উৎপাদন বন্ধ করেছে। ফলে সীমান্ত দিয়ে ফেনসিডিল আসা আমাদের দেশে অনেক কমে গেছে। আসলে আমাদের দেশে মাদক কখনো তৈরি হয় না। তারপরও আমরা এর শিকার হচ্ছি। কখনো হেরোইন, কখনো ফেনসিডিল—এখন ইয়াবা মহামারি আকার ধারণ করেছে। এর ভয়াবহতা সম্পর্কে আমরা মিয়ানমারকে জানিয়েছি। তারা আমাদের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু সুফল পাচ্ছি না।

এর আগে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ইয়াবা জব্দ প্রসঙ্গে বলেন, কিছু সমস্যা দেখা যাচ্ছে। আমি জানি না এটা কতটুকু সত্য। যদি সত্য হয়ে থাকে আমার মনে হয়, বিষয়টা দেখার আছে। আর যদি সত্য না হয়ে থাকে তাহলে বলার কিছু নেই। যেহেতু কথা এসেছে সেটা বলা প্রয়োজন মনে করি। যেসব সোর্স দিয়ে ইয়াবা ধরা হয়, তাদের টাকা না দিয়ে ইয়াবা দিচ্ছে। এটা মারাত্মক ব্যাপার। টাকা না দিয়ে ইয়াবা দেবেন—এটা হতে পারে না। এটার সত্যতা আমার কাছে নেই। আমি বলেছি, যেহেতু আমার কানে এসেছে। প্রশাসন ও আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছেন, তাঁরা সত্যতা দেখবেন।

র‍্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ মিয়ানমারের সীমান্তে নাফ নদীর এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জেলেমুক্ত অঞ্চল করার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, নাফ নদীতে মাছ ধরার কথা বলে ইয়াবা আনা হচ্ছে। এ জন্য বাংলাদেশের মাছ ধরার ট্রলারগুলোয় বিশেষ রং দেওয়া এবং জেলেদের পরিচয়পত্র দেওয়ার বিষয়টি চিন্তা করা উচিত। এ প্রস্তাব ছয় মাসের জন্য কার্যকর করা যেতে পারে।

মাদক ধ্বংস অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সিডিএর চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, নগর পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার, র‍্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহউদ্দিন আহমেদ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ধর্মীয় প্রতিনিধি ও মাদকসেবীও বক্তৃতা করেন।