লোকচক্ষু থেকে নিজেদের লুকাতে ধর্ষকদের আয়নাবাজি!

লোকচক্ষু থেকে নিজেদের আড়াল করতে ধর্ষণ মামলার আসামি সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফ চুল কেটে, জুলফি বাড়িয়ে-কমিয়ে চেহারায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতারের পর থানায় তোলা তাদের ছবি দেখে খানিকটা সংশয় দেখা দিয়েছিল। কারণ রবিবার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাফাত ও সাকিফের যেসব ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছিল এরাই কি তারা?

মামলার প্রধান আসামি সাফাতের আগের ছবিতে তার বাহারি চাপ দাঁড়ি দেখা গেলেও ধরা পরার পর তোলা প্রথম ছবিতে ক্লিনসেভ ও চুল ছোট করে কাটা দেখা গেছে। এতে তার চেহারার আদল বদলে যাওয়ায় প্রথমে সংশয় দেখা দিলেও পরে বুঝতে অসুবিধা হয় না এই সেই সাফাত।

আর সাকিফের পাওয়া আগের ছবির সঙ্গে বর্তমান চেহারার বদলে যাওয়া স্পষ্ট। তার চাপ দাঁড়ির বদলে খোঁচা খোঁচা হালকা দাঁড়ি ও উস্কোখুস্কো চুলে চিনতে শুরুতে খটকা লাগে।

‘ধর্ষক’দের চেহারা পাল্টাতে এই প্রচেষ্টাকে অনেকে ‘আয়নাবাজি’ বলে মন্তব্য করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। টাকার বিনিময়ে প্রতাপশালীদের সাজা ভাড়ায় খেটে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে নির্মিত আয়নাবাজি সিনেমার সঙ্গে মিলে গেলো বলেও অনেকে স্ট্যাটাস লিখেছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট থেকে ধর্ষণ মামলার দুই আসামি সাফাত ও সাকিফকে গ্রেফতার করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশের বিশেষ টিম তাদের নিয়ে রাজধানীতে পৌঁছায় বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এআইজি গোপনীয়) মনিরুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার সাফাত ও সাকিফকে সিলেটের জালালাবাদ থানার পাঠানটুলা এলাকার রশীদ ভিলা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ছিল।

প্রসঙ্গত, ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ এনে গত ৬ মে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন দুই তরুণী। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৮ মার্চ পূর্বপরিচিত সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওই দুই তরুণীকে জন্মদিনের দাওয়াত দেয়। এরপর তাদের বনানীর ‘কে’ ব্লকের ২৭ নম্বর সড়কের ৪৯ নম্বরে রেইনট্রি নামের হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, সেখানে দুই তরুণীকে হোটেলের একটি কক্ষে আটকে রেখে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ধর্ষণ করে সাফাত ও নাঈম। এ ঘটনা সাফাতের গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিও করানো হয় বলেও উল্লেখ করা হয় এজাহারে। ধর্ষণ মামলার আসামিরা হলো- সাফাত আহমদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ।