শহর গেছে গ্রামে : ঢাকা এখন ফাঁকা

পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা দেখে সোমবার (২৬ জুন) সারা দেশে উদযাপিত হবে মুসলিম সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের ছুটি কাটাতে এরই মধ্যে নাড়ির টানে গ্রামে ফিরেছেন মানুষ। তাই রাজধানী ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসা বাড়িতে ঝুলছে তালা। ফাঁকা রাজধানীতে যানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

বাড়তি ছুটির কারণে এবার একটু আগেভাগেই পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছেড়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন মানুষ। তাই ঢাকার চিরচেনা রূপ এখন নেই। ছুটিতে রাজধানী ছেড়েছেন অন্তত কয়েক লাখ ঘরমুখো মানুষ। আর তাতেই ফাঁকা ব্যস্ততম এই নগরী।

রোববার রাজধানীর মিরপুর, শাহবাগ, ফার্মগেট, বাংলামোটর, মগবাজারসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে রাস্তা ঘাট বেশ ফাঁকা। নেই চিরচেনা যানজট। নেই নগরীর কোলাহল। ব্যস্ততম রাস্তাগুলোতে কমে গেছে গাড়ি চলাচলও। তবে শপিং মল, সুপার মার্কেটগুলোতে শেষ মূহুর্তের কেনাকাটার জন্য মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

ফাঁকা হলেও সায়েদাবাদ, গাবতলী, শ্যামলী, কল্যাণপুর, মহাখালী বাস টার্মিনাল, সদরঘাট লঞ্চঘাট ও কমলাপুর রেল স্টেশনে ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে।

রাজধানীর বেশ কয়েকজন বাড়িওয়ালার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যারা ছাত্র তারা কিছুদিন আগে থেকেই যাওয়া শুরু করেন। তবে যারা চাকরিজীবী তারা গত বৃহস্পতিবার ঢাকা ছেড়েছেন।

মগবাজারের বাসিন্দা ও বাড়িওয়ালা মোফাজ্জল হোসেন জানান, তার বাসার ১০টি ফ্লাটের মধ্যে ৫টিই ফাঁকা হয়ে গেছে। সবাই চলে গেছেন নিজ নিজ গ্রামের বাড়ি।

এদিকে ব্যস্ততম নগরী ঢাকা ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় অনেকে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। বেসরকারি চাকরিজীবী আনোয়ার হোসেন বলেন, ঈদের এই সময়টা রাজধানীতে চলাচল করতে বেশ লাগে। কোন ট্রাফিক জ্যাম নেই। ঈদে পরিবার-পরিজন নিয়ে নিশ্চিন্তে ঘোরা যাবে। গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে চোখের পলকেই।

মিরপুরের যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, সাধারণ দিনে মিরপুর যেতে ৩ ঘন্টা সময় লেগে যায়। কিন্তু রাজধানী ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় মাত্র ৩০-৪০ মিনিটেই গুলিস্তান থেকে মিরপুরে চলে যেতে পারবো। তাছাড়া গণপরিবহন খালি থাকায় আরামেই যাতায়াত করা যাবে।

বাসাবোর বাসিন্দা জুলেখা খাতুন মুক্তা বলেন, শ্বশুরবাড়ি ঢাকায়, তাই এখানেই ঈদ করতে হয়। এই সময়টায় ঢাকা পুরোপুরি ফাঁকা হয়ে যায় বলে চলাফেরা করে অন্য রকম একটা মজা পাওয়া যায়। কোথাও যেতে হলে ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যামে বসে থাকতে হয়না। ফাঁকা ঢাকায় বাচ্চাদের নিয়ে ঘোরাঘুরিটা খুব উপভোগ্য হয়।