রাজ্জাককে শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে জনতার ঢল

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নায়করাজ রাজ্জাককে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় জমিয়েছেন শিল্পী, কলা-কুশলীসহ রাজ্জাক ভক্তরা।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন- এফডিসিতে প্রথম নামাজে জানাজা শেষে দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাজ রাজ্জাকের লাশ নিয়ে আসলে তাকে দেখতে পুরো এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে রাজ্জাককে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর আয়োজন করা হয়। শহীদ মিনারে রাজ্জাকের মরদেহে ইতোমধ্যে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুসহ বেশ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

এর আগে বেলা পৌনে বারোটার সময় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন এফডিসিতে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে নায়করাজের ঘনিষ্ঠজন, সহকর্মী ও শিল্পী, কলা-কুশলী এবং ভক্তরা অংশ নেন। সকালে রাজ্জাকের লাশ এফডিসিতে নিয়ে আসা হলে শিল্পী, কলা-কুশলী সহ ভক্তরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

শহীদ মিনারে সর্বস্তরের জনতার শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাদ জোহর রাজধানীর গুলশান আজাদ মসজিদে নায়ক রাজের দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

সোমবার সন্ধ্যায় ৭৫ বছর বয়সী ঢাকাই সিনেমার এই কালজয়ী নায়ক রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

বিকাল ৫টা ২০মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।

রাজ্জাকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন। এছাড়া চলচ্চিত্র অঙ্গনের সহযোদ্ধারাও শোক জানিয়েছেন।

নায়ক আবদুর রাজ্জাক ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ওখানেই তার বেড়ে ওঠা। স্কুল জীবনে থাকা অবস্থায় তার অভিনয়ের হাতেখড়ি। শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা স্কুলের মঞ্চনাটক বিদ্রোহীতে গ্রামীণ কিশোর চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই নায়ক রাজের অভিনয়ে সম্পৃক্ততা। পাকিস্তানেও তিনি অভিনয় নিয়ে কাজ করেছেন। এরপর ১৯৬৬ সালে বেহুলা চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ঢাকাই ছবিতে সদর্পে উপস্থিত হন দর্শকনন্দিত এই নায়ক। কয়েক দশকের অভিনয় জীবনে তিনি জীবন থেকে নেয়া, অবুঝ মন, রংবাজ, আলোর মিছিলসহ প্রায় ৩০০টি বাংলা ও উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এছাড়াও পরিচালনা করেছেন প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র।