শাকিব খানকে বহিষ্কার রহস্যজনক : ইনু

‘দর্শকেরা হল থেকে সরে গিয়েছিলও কিন্তু। প্রখ্যাত অভিনেতা শাকিব খানের নেতৃত্বে চলচ্চিত্রে পুনরুজ্জীবন ঘটছে। গত কয়েক মাসে শাকিব খানকে দুইবার বহিষ্কার করে দিল!’

বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে এসে এমনটাই বললেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। গতকাল শনিবার রাতে এফডিসির চলমান আন্দোলন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ও সেন্সর বোর্ড সদস্য ইফতেখার উদ্দিন নওশাদের লাঞ্ছনা, শাকিব খান, জাজ মাল্টিমিডিয়া ইস্যুসহ চলচ্চিত্রের নানা বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেন। শাকিব খানকে বহিষ্কারের বিষয়টি রহস্যজনক বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রে অনিয়মের অভিযোগ এনে কিছুদিন ধরেই চলচ্চিত্রের শিল্পী, পরিচালক, প্রযোজক ও কলাকুশলীদের ১৬টি সংগঠনের একাংশ মিলে গঠিত নতুন সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবার আন্দোলন করে। তারা ‘নবাব’ ও ‘বস-২’ সিনেমা দুটির বিরুদ্ধে যৌথ প্রযোজনার নিয়ম না মানার অভিযোগ করে। এ নিয়ে চলচ্চিত্র পরিবার দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। উভয় পক্ষই একে অপরের বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে।

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘যৌথ প্রযোজনার সিনেমাকে কেন্দ্র করে সেন্সর বোর্ডের বৈঠকে আক্রমণ করা একদম নীতিবহির্ভূত কাজ। এর সঙ্গে যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণের কোনো সম্পর্কই নাই, মানে তাদের কোনো দোষই নাই। ওখানে যে সম্মানিত সদস্য নওশাদ সাহেবের গায়ে হাত দিয়েছেন, এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা। এবং বাংলাদেশের পদকপ্রাপ্ত শিল্পী মিশাদের উপস্থিতিতে এই লাঞ্ছনা খারাপ ঘটনা।’ তিনি বলেন, ‘আবার বলছি, যৌথ সিনেমার নির্মাণ থেকে শুরু করে মুক্তি পর্যন্ত সবকিছুর সিদ্ধান্ত নেয় এফডিসির প্রিভিউ কমিটি। এখানে কোনো মন্ত্রীও বসেন না, সচিবও বসেন না।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলচ্চিত্র পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর অন্ধকার পোড়োবাড়ি এফডিসি চত্বরকে পুনরুজ্জীবিত করেছি আমি। এখানে কোটি টাকার আধুনিক ডিজিটাল যন্ত্রপাতি, ক্যামেরা—সবই এনে দিয়েছি। এখন এফডিসিতে রমরমা অবস্থা, প্রতিদিন শুটিং হচ্ছে। শেখ হাসিনা চলচ্চিত্রকে শিল্প ঘোষণা করেছেন। সবকিছু করার পরে যখন ছবি তৈরি হচ্ছে এবং দর্শকেরা আবার ফেরত আসছে, আমি হল সংস্কার করার জন্য টাকা জোগাড় করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, টাকা দিয়ে দেন। আমি দিয়ে দেব, হল ডিজিটাল করুন, যাতে মানুষ হলে যায়।’

মন্ত্রী বলেন, যৌথ প্রযোজনার নিয়ম না মানা ও জ্যেষ্ঠ শিল্পীদের প্রতি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগ এনে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবারের ব্যানারে আন্দোলনকারীর শিল্পী, পরিচালক, প্রযোজক ও কলাকুশলীদের একাংশ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়াকে নিষিদ্ধ ও শাকিব খানকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তে তিনি অবাক হয়েছেন। তাঁর কাছে এটা রহস্যজনক লাগছে বলেও উল্লেখ করেছেন।

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘আমি ওদের পক্ষে বা বিপক্ষে না। ওটা আমার কোনো ব্যাপার না। আমি বলছি যে আজকে জাজ মাল্টিমিডিয়াকে বহিষ্কার করে দিল, শাকিব খানকে আজীবন কাজ করতে দেবে না। এই জিনিসগুলো আমার কাছে রহস্যজনক লাগছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে, চলচ্চিত্র জগতের যে পরিবার, যাঁরা প্রখ্যাত অভিনেতা, অভিনেত্রী, পরিচালক, প্রযোজক, তাঁরা তাঁদের অভ্যন্তরীণ ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে লিপ্ত। সেখানে সরকারকে কেন জড়াচ্ছে? মন্ত্রীকে কেন জড়াচ্ছে? আর আমার কাছে এটা রহস্যজনক মনে হচ্ছে, একটা অস্থিরতা দেখছি।’