সন্ধ্যা হতেই ভূত-প্রেতাত্মায় ভরে উঠে এই দুর্গ

অনেক চেষ্টা করেও ভূত যে আছে, তা প্রমাণ করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা ভারতের রাজস্তানের ভানগড় দুর্গ ভূতের আখড়া। লোক মুখে শোনা যায়, আজও নাকি দুর্গে হেঁটেচলে বেড়ায় অতৃপ্ত আত্মারা।

জয়পুর ও দিল্লির মাঝামাঝি একটি ছোট্ট গ্রাম ভানগড়। সেখানে যে দুর্গ রয়েছে, তাতে নাকি সন্ধ্যার পর যাওয়া যায় না। দুর্গের দরজায় এ নিয়ে সরকারি নোটিসও রয়েছে।

এককালে সেখানে বালুনাথ নামে এক সাধুর আস্তানা ছিল। পরে রাজা মাধো সিং সেখানে একটা দুর্গ বানাতে চাইলে বালুনাথ একটি শর্তে রাজি হন। শর্ত ছিল কোনওদিন যাতে দুর্গের ছায়া তার আশ্রমকে স্পর্শ না করে। না হলেই বিপদ!

অনুমতি পেয়ে রাজা দুর্গ তৈরি করতে শুরু করেন। প্রথমে দুর্গটি ছিল ছোটো। কিন্তু পরে দুর্গটির আকার বাড়তে থাকায় একদিন তার ছায়া স্পর্শ করে বালুনাথের মন্দিরকে। তখনই ঘটে বিপদ। ধ্বংসাবশে পরিণত হয় ভানগড় দুর্গ।

শোনা যায়, সেই কারণে নাকি আজও সেখানে নতুন বাড়ি তৈরি করতে গেলেই ভেঙে যায়। ভানগড় দুর্গকে নিয়ে এমনই কাহিনি রয়েছে। যেমন রূপসী রাজকন্যা রত্নাবতী ও তান্ত্রিক সিংগিয়ার গল্প।

স্থানীয়রা বলে, বহুবছর আগে রাজকুমারী রত্নাবতীর রূপে মুগ্ধ হয়ে তার প্রেমে পড়ে যান সেই তান্ত্রিক এবং তাকে বিয়ে করারও স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। মন্ত্রতন্ত্রে সে রাজকুমারীকে বশ করতে চায়। কিন্তু সেই ছলে রাজকুমারী বশে আসেননি। তান্ত্রিক তার নিজের ফাঁদেই প্রাণ হারায়।

কিন্তু মারা যাওয়ার আগে সমগ্র ভানগড়কে অভিশাপ দিয়ে যায় তান্ত্রিক। কিছু দিনের মধ্যেই ভানগড়ের বুকে নেমে আসে অকাল মৃত্যুর ছায়া। কিছুদিনের মধ্যেই প্রতিবেশী রাজ্য আজবগড় আক্রমণ করে ভানগড়কে। সেই লড়াইয়ে মারা যায় ভানগড়ের মানুষ।

তবে ভানগড়কে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিলেও তা দখল করতে পারেনি আজবগড়ের সেনারা। কোনও অদৃশ্য শক্তি নাকি বাধা দিয়েছিল। সেই ঘটনার পর বহু শতাব্দি কেটে গেছে। আজও গা ছমছমে রহস্য নিয়ে আরাবল্লির কোলে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভানগড় দুর্গের ধ্বংসাবশেষ।

শোনা যায়, এখনও নাকি ভানগড়ের আত্মারা পাহারা দিয়ে চলেছে এই দুর্গ। ছোটোবেলায় দাদা-দাদীমার মুখে ভূতের গল্প শুনে গায়ে কাঁটা দিত। যদিও ভূতের অস্তিত্ব আছে কিনা তা প্রমাণিত নয়।