সব দোষ ভারতের ভিসা আর অনলাইন শপের!

নুসরাত শারমিন : নানান রঙের শাড়িতে ঠাঁসা দোকান। আছে বেনারসি, সিল্ক, তাঁত, জামদানী এবং আরও নানান ধরণের দেশি শাড়ি। সেই সাথে রাখা হয়েছে ভারতীয় শাড়িও। কারণ, বেশ কয়েক বছর ধরেই ভারতীয় সিরিয়ালগুলোর প্রভাবের কারণে ভারতীয় শাড়ির চাহিদা অনেক। কিন্তু এত এত শাড়ি রেখে লাভ কি? দোকানে তো ক্রেতাই নেই। গুটি কয়েক ক্রেতা দোকানে ঢুকেই দামাদামি করে বের হয়ে যাচ্ছেন। কিনছেন না তেমন কেউ।

নিউমার্কেটের শাড়ির দোকানে কথা বলে জানা গেল, ক্রেতাদেরকে ডেকেও দোকানে ঢুকাতে পারছেন না তারা। মার্কেটে অনেকেই আসছেন কেবল ঘুরতে। ডিসকাউন্টেও আকর্ষণ করা যাচ্ছে না ক্রেতাদের। তারা এজন্য দুষছেন ভারতীয় ভিসার সহজিকরণকে। সহজে ভারতের ভিসা পাওয়ার কারণে অনেকেই ভারতে বেড়াতে যাচ্ছেন। ফেরার সময় সেখান থেকে কেনাকাটা করে ফিরছেন বলে জানান দোকানীরা। আর তাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। মৌচাক মার্কেট এবং মিরপুর বেনারসি পল্লীর দৃশ্যও একই। তারাও বলছেন, সব দোষ ভারতের ভিসা এবং অনলাইন শপের। বাংলাদেশের মানুষ সহজেই ওপারে গিয়ে কেনাকাটা করতে পারছেন বলে ঈদের বাজারে লাভের বদলে ক্ষতির হিসাব গুনছেন বিক্রেতারা।

বিক্রেতারা জানালেন অনলাইন শপগুলোও তাদের ব্যবসার ক্ষতি করছে। ভারত থেকে অবৈধভাবে লাগেজে পোশাক এনে অনলাইনে বিক্রি করছেন অনেকেই। ফলে কষ্ট করে মার্কেটে না গিয়ে কর্মজীবী নারীরা ফেসবুক থেকেই অর্ডার করছেন কাঙ্ক্ষিত পোশাকটি। ফলে শাড়ির মার্কেটের কেনা-বেচায় বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

অবশ্য ক্রেতারা জানাচ্ছেন ভিন্ন মত। ক্রেতাদের মতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে শাড়ি এনে পাঁচগুণ বেশি দাম হাঁকছেন। বিক্রেতারা অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন বলেই অনেকে কোলকাতা যাচ্ছেন কেনাকাটার জন্য। তবে অতিরিক্ত দাম হাঁকার বিষয়টি অস্বীকার করছেন বিক্রেতারা। তারা জানিয়েছেন তারা পাইকারি দামে বিক্রি করছেন। তাই দাম বেশি নেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

কম মূল্যে পোশাক কেনার জন্য ক্রেতারা কোলকাতা যাচ্ছেন। ফলে দেশীয় শাড়িগুলো অবহেলিত হচ্ছে। এতে আগ্রহ হারাচ্ছেন তাঁতিরা এবং বিক্রেতারা। ফলে দেশীয় ঐতিহ্যের অনেক শাড়ি এবং নকশাই হারিয়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি।