সরকার চালাচ্ছে আ’লীগ নেতারা নাকি গোয়েন্দারা?

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে যেহেতু তল্লাশি করে পুলিশ বলেছে প্রান্তি শূন্য তাই স্বাভাবিকভাবেই জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আসলে সরকার চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতারা, নাকি গোয়েন্দারা?

শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে পুলিশি তল্লাশির নিন্দা ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেয়া বক্তব্যে বিএনপি অত্যন্ত চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলছি- গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তল্লাশি রাষ্ট্রের জন্য বিপদজনক। তাহলে কোনো গোয়েন্দা সংস্থা পুলিশকে বিভ্রান্ত করছে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘একটি কথা মনে রাখবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেতন হয় জনগণের ট্যাক্সের টাকায়। যে সমস্ত উচ্চবিলাসী কর্মকর্তা মনে করছেন এই সরকারই চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত, যারা বেআইনিভাবে আইনের বিরুদ্ধে কাজ করছেন তাদেরকে অবশ্যই জবাব দিতে হবে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে এমন আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার দেশের সকল কিছু নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ সরকার বেআইনি ও অনৈতিক। অনৈতিকভাবে তাদের জন্ম। তাদের রাষ্ট্র পরিচালনা করার অধিকার নেই। এরা (সরকার) অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের সকল সম্ভাবনা বিনষ্ট করে দিচ্ছে। তাই এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে দেশের মানুষের ততবেশি ক্ষতি হবে। মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা চুরমার হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করায় আওয়ামী লীগের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। অনেকইে এখন সন্দেহ পোষন করছেন তারা (আওয়ামী লীগ নেতারা) সুস্থ আছেন কী না?

যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, যুবদলের ঢাকা মহানগর (উত্তর) সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর আলম, যুবদলের ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) সভাপতি রফিকুল ইসলাম মঞ্জু প্রমুখ।

এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের আরও একটি যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত ‘সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক তানভির আহমেদ রবিনকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং তার মুক্তির দাবি’তে এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‌‘আমরা আওয়ামী লীগের সাথে আরও একটি যুদ্ধ করবো, আমরা সফল ভাবে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের কমিটি সম্পূর্ণ করেছি, এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। নতুন করে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে। আর এ যুদ্ধ হবে রাজনীতির মাঠে ভোটের ও রাজনৈতিক যুদ্ধ। এই যুদ্ধে বিএনপি বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন খালেদা জিয়া।’

নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘রোজার পরে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা দিবে সেই অনুযায়ী আন্দোলন করে সহায়ক সরকার দিতে তাদেরকে বাধ্য করা হবে।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন-বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুসহ সংগঠনের নেতারা।