সাঁতার কেটেই স্কুলে পৌঁছে দেশাত্মবোধের অনন্য নজির স্থাপন!

নেই কুচকাওয়াজ, দেশাত্মবোধক সঙ্গীত কিংবা ভাষণ। আছে এক গলা পানি আর নিখাদ ভালোবাসা। তাই গলা পানিতে দাঁড়িয়ে জীবন বিপন্ন করে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে ভারতের স্বাধীনতার ৭০তম বর্ষপূর্তিতে।

ছবিটা ইন্টারনেটে ঝড়ের বেগে ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যে আপনিও দেখেছেন মিডিয়ায়। এবার জেনে নিন তাদের‚ যাদের এই কুর্নিশযোগ্য কীর্তি।

ভারতের আসামের ধুবুড়ির ফকিরগঞ্জ থানার নস্করা প্রাথমিক বিদ্যালয়। কাছেই ফুঁসছে ব্রহ্ম পুত্র নদ। গোটা এলাকার সঙ্গে বানভাসি এই স্কুলও। বন্যায় বেশ কয়েকদিন ধরে ক্লাস বন্ধ। ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বন্যাদুর্গত অঞ্চলে স্কুলগুলোকে স্বাধীনতা দিবস পালন না করারই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মানতে পারছিলেন না নস্করা প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাজেম শিকদার। স্বাধীনতা দিবসে স্কুলে পতাকা উঠবে না!

হাঁটু পানি ভেঙেই রওনা দিলেন তিনি। ডেকে নিলেন আরও তিন শিক্ষককে। নৃপেন রাভা‚ জয়দেব রায় এবং মিজানুর রহমানকে। তিনজনেরই হাঁটু বা কোমর সমান পানি স্কুল চত্বরে।

প্রধান শিক্ষক তার সঙ্গে সাঁতার জানে তৃতীয় শ্রেণীর এমন দুই শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়েছিলেন। প্রায় সাঁতার কেটেই স্কুলে পৌঁছায় ওই দুই ছাত্র‚ জিয়ারুল আলি খান ও হায়দার আলি। স্কুল চত্বরে দুই খুদের কাঁধ অবধি পানির নিচে।

ওই অবস্থাতেই উঠল ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা। পতাকাকে স্যালুট জানাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক‚ আরেক শিক্ষক এবং দুই খুদে ছাত্র। ছবি তুলে কোনওমতে ফেসবুকে পোস্ট করেন অন্য শিক্ষক মিজানুর রহমান। চোখের নিমেষে ছড়িয়ে পড়ে। দেখে সবাই শিহরিত।

দেশের প্রতি তাদের এই আবেগ এবং ভালোবাসাকে নতজানু হয়ে বাহবা জানাতে দ্বিধা করেননি লোকজন।