সাকিবের কাছে ধরাশায়ী অ্যান্ডারসন

ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে পারদর্শী কোরি অ্যান্ডারসন। বাংলাদেশের বিপক্ষেও হয়তো সেই ঝড় তোলার মিশনে নেমেছিলেন। উইকেটে এসে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সাকিব আল হাসানের কাছে ধরাশায়ী হওয়ায় সেই ঝড় আর তোলা হয়নি অ্যান্ডারসনের। কিউই এই অলরাউন্ডারের দৌড় থেমেছে ২৪ রানে। সাকিবের বলে স্কোয়ার লেগে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে অ্যান্ডারসন ধরা পড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ৩৯.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১৬ রান।

এর আগে বাংলাদেশের শুভসূচনা এনে দেন দুর্দান্ত ছন্দে থাকা মোস্তাফিজুর রহমান। নিউজিল্যান্ড শিবিরে সবার আগে আঘাত হানেন কাটার মাস্টার। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে লুক রনকিকে পরাস্ত করেন তিনি। চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে মোস্তাফিজকে তুলে মারেন রনকি। এক্সট্রা কাভারে সাকিব আল হাসানের হাতে ধরা পড়েন কিউই এই উইকেটরক্ষক। বিদায়ের আগে ৫ বল খেলে রনকি করেছেন ২ রান।

শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠে নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় উইকেটে নেইল ব্রুমকে নিয়ে ১৩৩ রানের জুটি গড়েন টম ল্যাথাম। দারুণ জমে উঠেছিল এই জুটি। ক্রমশই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা নেইল ব্রুমকে ফেরালেন নাসির হোসেন। স্কোয়ার লেগে সুইপ করতে চেয়েছিলেন ব্রুম। কিন্তু বল সোজা চলে যায় মাশরাফির হাতে। বিদায়ের আগে ৭৬ বলে ৭টি চারে ৬৩ রান করেছেন কিউই এই ব্যাটসম্যান।

প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই সাজঘরে ফিরে যেতেন টম ল্যাথাম। মাশরাফির বলে স্কোয়ার লেগে সুইপ করতে চেয়েছিলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক। বলটি গিয়ে আশ্রয় নিতে পারত নাসির হোসেনের হাতে। কিন্তু পারলেন না বাংলাদেশি এই ফিল্ডার। নাসিরের হাত ফসকে বল গড়ায় মাটিতে।

জীবন ফিরে পাওয়া লাথামকে আর রুখে কে? ঠাণ্ডা মাথায় ব্যাট করে ফিফটি করলেন। এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকেই। কিন্তু ল্যাথামকে সেঞ্চুরি করতে দিলেন না সেই নাসিরই। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে কিউই দলনেতাকে বোল্ড করেন ৭ মাস পর একাদশে ফেরা এই অলরাউন্ডার। আউট হওয়ার আগে দলকে ভালো অবস্থানে রেখে গেছেন ল্যাথাম। ৯২ বলে ১১টি চারের সাহায্যে খেলেছেন ৮৪ রানের ইনিংস।

এদিকে ডাবলিনের ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাবে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের শেষ ম্যাচে টস নামক ভাগ্য পরীক্ষায় জিতেছেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। টস জিতে প্রথমে তিনি ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। টম ল্যাথামের নিউজিল্যান্ডকে পাঠিয়েছেন ব্যাটিংয়ে। একাদশে একটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। ৭ মাস পর একাদশে জায়গা পেয়েছেন নাসির হোসেন। আইরিশদের বিপক্ষে খেলা সানজামুল ইসলাম বাদ পড়েছেন।

ত্রিদেশীয় সিরিজে দুই দলের প্রথম দেখায় জয় পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ওই ম্যাচে কিউইদের হারানোর সুযোগ পেয়েছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজারা। কিন্তু বোলিংয়ে কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান ছাড়া আর তেমন কেউ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি। যে কারণে বিদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো কিউইদের হারানোর সুযোগটা হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের।

ডাবলিনে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে জিমি নিশামের অলরাউন্ডার পারফরম্যান্সে কিউইদের কাছে চার উইকেটে পরাস্ত হন মাশরাফি-সাকিবরা। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৫৭ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে ৪৭.৩ ওভারেই (১৫ বল হাতে রেখে) জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে টম ল্যাথামের দল।

রোববার আইরিশদের ১৯০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। আর তাতে বাংলাদেশের আশা ফুরিয়ে যায়। ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হয় টম লাথামের দল। মাশরাফি বিন মর্তুজার বাংলাদেশকে তাই সান্ত্বনা খুঁজতে হয় রানার্স-আপ হয়েই।

বাংলাদেশ একাদশ : মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহীম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নাসির হোসেন, রুবেল হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান।

নিউজিল্যান্ড একাদশ : টম ল্যাথাম (অধিনায়ক), লুক রনকি, রস টেলর, নেইল ব্রুম, কলিন মুনরো, কোরি অ্যান্ডারসন, ম্যাট হেনরি, জিমি নিশাম, মিচেল স্যান্টনার, হামিশ বেনেট ও জিতান প্যাটেল।