সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে শিশুটি

সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে নড়াইলের ১০ বছর বয়সী এক শিশু। সে বর্তমানে নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নির্যাতিত শিশু রোখসানার পরিবারের অভিযোগ, বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজের কথা বলে ঢাকায় নিয়ে এক ব্যবসায়ী দম্পতি তাদের মেয়ের ওপর অমানবিক নির্যাতন করেছে।

জেলার লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের বাহিরপাড়া গ্রামের দিনমজুর রাসেল শেখের মেয়ে।

নির্যাতিত শিশুটির মা রত্মা বেগম জানান, জানুয়ারি মাসে তাদের প্রতিবেশী সালেহা বেগম তার বড় মেয়ে রোখসানাকে ঢাকার ওয়ারীতে ব্যবসায়ী আসাদুল্লাহর বাসায় কাজের প্রস্তাব দেন। বলা হয়েছিল তাদের একটি শিশুকে দেখাশোনা করতে হবে।

তিনি বলেন, সংসারের অভাব অনটনের কথা চিন্তা করে মেয়েকে ঢাকায় পাঠাতে রাজি হই। জানুয়ারি মাসে মেয়েকে নিয়ে যায় প্রতিবেশী সালেহা।

রত্মা বেগম জানান, গত ১৭ আগস্ট আসাদুল্লাহর ভাই ফোনে দিয়ে জানান, রোখসানা অসুস্থ হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঢাকায় গিয়ে অজ্ঞান অবস্থায় মেয়েকে হাসপাতালে দেখতে পান তারা। সেখান থেকে নিয়ে এসে ১৯ আগস্ট নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

তিনি জানান, ব্যবসায়ীর স্ত্রী সোনিয়া বেগম তার মেয়েকে নির্যাতন করেন। মেয়ের পুরো শরীরজুড়ে শুধু আঘাতের চিহ্ন। হাসপাতালে কঙ্কালের মতো শুয়ে আছে।

তিনি মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

নড়াইল সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মশিউর রহমান বাবু জানান, শিশুটি ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি ছিল। সেখান থেকে নড়াইল সদর হাসপাতালে রেফার্ড হিসেবে ভর্তি হয়েছে। তিনি জানান, প্রকৃতপক্ষে সঠিক কারণ গোপন করা হয়েছে। বর্তমানে শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শিশুটির শরীরজুড়ে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন। পোড়ানোর চিহ্ন রয়েছে। হাড় ভাঙা রয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। যৌন নির্যাতন হয়েছে কিনা সে ব্যাপারেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

এ ব্যাপারে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম জানান, শিশু নির্যাতনের ঘটনা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দিলে মামলা নেয়া হবে। বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।