সালেহা পাগলি ফের মা হলেন স্বামীর মৃত্যুর ৭ বছর পর

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের নবগ্রাম গ্রামের তাজ উদ্দিনের মেয়ে সালেহা আক্তারের স্বামী পাশের আরোহা গ্রামের মোস্তফা খান প্রায় সাত বছর আগে মারা যান। এরপর থেকে তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী। গত পাঁচ বছর ধরে সালেহা নবগ্রাম খেয়াঘাটের দক্ষিণ পাশে খোলা জায়গায় বসবাস করছেন। সেখানে চারদিকে বাঁশ দিয়ে ঘেরা পলিথিনের ছাউনি রয়েছে। ছাউনির ভেতর একটি মশারি টাঙিয়ে তার ভেতর দিনযাপন করেন সালেহা। সালেহা পাগলি হিসেবেই তার পরিচিতি।

আতুল্যা বাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী শামসুল আলম জানান, গত ২৮ মে সন্ধ্যায় সালেহা একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেন। পরদিন ২৯ মে দুপুরে তিনি ঘটনাটি জেনে উয়ার্শী ইউনিয়নের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রী মোর্শেদা আক্তারকে খবর দেন। তারা দুজন সালেহার থাকার জায়গার পাশে একটি কাঠবাগানে সালেহাকে নিয়ে পরিচর্যা করেন। নবগ্রামের পরিবার কল্যাণ সহকারী প্রতিমা রানী ঘোষ বলেন, মা ও শিশু দুজনই সুস্থ আছেন। শিশুটি মায়ের বুকের দুধ খাচ্ছে। বর্তমানে সুস্থ রয়েছে তারা।

কিন্তু স্বামী মারা যাওয়ার ৭ বছর পর ফের সন্তান?

সালেহা জানান, তার স্বামীর নাম মোস্তফা খান। সদ্য জন্ম নেওয়া নবজাতকসহ তিন ছেলে-মেয়ে রয়েছে তার। স্বামী মারা গেছেন সাত বছর আগে। সদ্য জন্ম নেওয়া সন্তানের বাবার পরিচয় জানতে চাইলে সালেহা বলেন, এই সন্তানের বাবার নাম হারুন। বাড়ি সূত্রাপুরের ধামরাই থানায়। এখানে আসার পর হারুনের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তার সঙ্গে বিয়ে হয়। হারুন শাকের ব্যবসা করেন। কয়েক মাস হয়েছে হারুন এখন আর এখানে আসেন না।

মির্জাপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, সালেহাকে তিনি ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক লুৎফুল কিবরিয়া প্রাথমিকভাবে ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। এলাকার স্বাস্থ্যকর্মীরা সার্বক্ষণিক তার পরিচর্যা করছেন।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত সাদমীন জানান, সালেহার ১১ শতক জায়গা তার বোনের স্বামী দখল করে রেখেছেন বলে তিনি শুনেছেন। খুব দ্রুত ওই জমি উদ্ধারের উদ্যোগ নেবেন তিনি। সালেহা ও তার তিন সন্তানের অধিকার রক্ষার চেষ্টাও করবেন তিনি।