সিদ্দিকুর জখমের সত্য উদঘাটনে ব্যর্থ হলে আবার তদন্ত

সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমানের চোখে আঘাত লাগার ঘটনার ‘সত্য’ উদঘাটনে পুলিশ ব্যর্থ হলে সরকার আবার তদন্ত করবে। এ কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পুলিশ প্রধান সিদ্দিকুরের ওপর হামলার ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে আমরা ব্যবস্থা নেব। তবে কমিটি যদি সত্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা আবারো কমিটি করব।’

গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় অবস্থান নিয়ে তাদের দাবি জানাতে থাকে। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে আগাতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। বিনা উষ্কানিতে ছাত্রদের লাঠিপেটার পাশাপাশি পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে বলে অভিযোগ উঠে। পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের সেল গিয়ে আঘাত হানে সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুরের দুই চোখে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর সিদ্দিকুরকে ভর্তি করা হয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে। সেখানে শনিবার তার চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তবে তিনি এক চোখে দেখছেন না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

সিদ্দিকুরের উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারি খরচে তাকে ভারতের চেন্নাই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে তার পাসপোর্ট করতে দেয়া হয়েছে। সেটা হয়ে গেলেই বাকি আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা হবে।

সিদ্দিকুরের আঘাত লাগার ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, সিদ্দিকুরের ঘটনা স্যাবোটাজ কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক জানিয়েছেন, এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে পুলিশ অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সিদ্দিকুরের উপর হামলার ঘটনা দুঃখজনক। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিদ্দিকুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিচ্ছেন। এ থেকে প্রমাণ হয় সরকার জনবান্ধব।’

আর কোনো ঐশী তৈরি হতে দেয়া হবে না

দেশকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষায় সরকার বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে আর কোনো ঐশী তৈরি হতে দেয়া হবে না। এ বিষয়ে সরকার কঠোর মনোভাব পোষণ করে।

কিশোরী ঐশী মাদকে আসক্ত ছিল বলে পুলিশের তদন্তে দেখা গেছে। বাবা-মা হত্যার দায়ে তাকে ফাঁসির দণ্ড দিয়েছিল বিচারিক আদালত। তবে উচ্চ আদালত সে দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন করেছে।

গ্রাম পর্যায়ে ইয়াবার বিস্তার থেকে উত্তরণে সরকার কী করছে- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘ইয়াবা বহন করা সহজ হওয়ায় এটি গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। পকেটে করেও ইয়াবা নেয়া যায়। তবে ইয়াবা বন্ধে সরকার মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করছে। পুলিশ বিজিবি এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ইয়াবা মূলত নাফ নদীতে যেসব জেলেরা আছে তাদের মাধ্যমে বেশি আসে। সরকার এক্ষেত্রে পরিকল্পনা করেছে প্রথম দিকে পরীক্ষামূলকভাবে তিন থেকে ছয়মাস জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। এই সময় জেলেদের ভাতা দেয়া হবে। বা অন্যকাজ দেয়া হবে।’