সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে দীর্ঘ যানজট

সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার মহাসড়কের কয়েকটি পয়েন্টে দেখা দিয়েছে দীর্ঘ যানজট।

শুক্রবার ভোর থেকে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের প্রায় ২৪ জেলার যানবাহনগুলো লম্বা সারিবদ্ধ হয়ে থেমে থেমে চলাচল করছে। ঢাকা থেকে ঈদে ঘরমুখো মানুষের বাড়তি গাড়ির চাপ ও উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকামুখী অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে যানজটের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে পণ্য পরিবহন ও যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছতে পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।

যানজটে আটকে পড়া নাটোরের বাসযাত্রী নাফিসা বুশরা জানান, আমি ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঢাকা থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছি। গাড়ি সারা রাস্তা ভালোই চলছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে প্রচুর পরিমাণ গাড়ি সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে আছে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। তবুও নাড়ীর টানে বাড়ি ফিরতেই হবে।

ট্রাক চালক আব্দুর রহিমের অভিযোগ, এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ছোটবড় খানাখন্দের সৃষ্টি এবং ঝুঁকিপূর্ণ সরু দুইটি সেতু রয়েছে। যে কারণে খুব ধীর গতিতে দেখে শুনে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।

ঈদ এলেই সড়ক ও জনপথ বিভাগ লোক দেখানো মেরামত কাজ করে দায়িত্ব শেষ করে। এবার তাও করা হয়নি।

বিশিষ্টজনেরা জানান, একটি গাড়ি দাঁড়ালে বা ছোট কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই উভয়পাশে এক মিনিটের মধ্যেই এক থেকে দেড় কিলোমিটার সড়ক জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের পাশে হাট-বাজার, মহাসড়ক ঘেঁষে হোটেল রেস্তোরাঁ স্থাপন, সরু ব্রিজ, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, চারলেন সড়ক না হওয়া, ধীরগতিতে ট্রাক ও লরি চলাচল, ওভার টেকিং, সড়কের বিভিন্নস্থানে খানাখন্দ ও তা মেরামতের জন্য সড়কের একপাশ বন্ধ রাখাই এ যানজটের প্রধান কারণ।

সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগের টিআই মিলাদুল হুদা জানান, এমনিতেই বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি থাকে। তারপর ঈদকে সামনে রেখে শিল্প-কারখানা ছুটি হওয়ায় নাড়ির টানে বাড়ি ছুঁটছে মানুষ। তাদের বহন করা বাস মহাসড়কে উঠায় কয়েকটি পয়েন্টে দেখা দিয়েছে থেমে থেমে যানজট। এছাড়া, সড়ক দুর্ঘটনা ও গাড়ি বিকল হলে যানবাহনের লম্বা সারি সৃষ্টি হয়ে ধীরগতিতে চলাচল করে।

সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, মহাসড়কে চলাচলকারী ট্রাক ও লরিগুলোর ধীরগতি এবং দ্রুতগতির যানবাহনগুলোর ওভারটেক করার কারণেই মূলত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া, বৃষ্টির কারণে এসব সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ওইসব খানাখন্দ মেরামত করতে গিয়েও ঈদে ঘরমুখি মানুষদের কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।