সুস্থ থাকতে আসলে কতটুকু প্রোটিন দরকার?

এ যুগে স্বাস্থ্যটাকে ঠিক রাখতে মানুষের চেষ্টার অন্ত নেই। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ছেয়ে ফেলছে আমাদের। অথচ দেহযন্ত্রটাকে ঠিক রাখার অন্যতম অস্ত্র হচ্ছে প্রোটিন। সুগঠিত পেশি গড়ে তোলার কথা মাথায় আসলে কল্পনায় ভাসে মুরগি-গরুর থোকা থোকা মাংস আর তথাকথিত ফিটনেস গুরুদের নিজস্ব গবেষণায় বানানো প্রোটিন শেক জাতীয় খাবারের কথা।

আসলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর মিডিয়ার কল্যাণে মানুষের মাঝে প্যাকেটজাত প্রোটিন গ্রহণের আগ্রহ বেড়েছে। এসব পণ্যের বিক্রি বাড়ার কারণে আরো রং চংয়া বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গেছে মিডিয়া। আমেরিকান বিভিন্ন গবেষণায় দেখানো হয়, ২০১৬ সালেই আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে মানুষের উচ্চামাত্রার প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ বেড়েছে ৪০ শতাংশ। আবার যারা নিরামিষভোজী তারাও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন গ্রহণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

এ কারণে একজন মানুষের প্রতিদিন কতটুকু প্রোটিন গ্রহণ জরুরি তা জানার আগ্রহ সবার। এমন প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের হরহামেশাই করা হয়। এটা সবারই জানতে হবে।

পেশির গঠন-মেরামত আর বৃদ্ধিতে প্রোটিনের বিকল্প নেই। শুনতে একটু দুর্বল লাগলেও প্রোটিন কিন্তু প্রয়োজনীয় হরমোন আর এনজাইম তৈরিতেও কাজ করে। দেহের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।

পাবলিক হেলত ইংল্যান্ডের দেওয়া তথ্যমতে, ১৯-৬৪ বছর বয়সী পুরুষদের প্রতিদিন ৫৫.৫ গ্রাম প্রোটিন দরকার। আর একই বয়সী নারীদের দরকার ৪৫ গ্রাম। সাধারণ হিসাবটি হলো, প্রত্যেক মানুষের দেহের ওজনের প্রতি কেজির জন্য ০.৮ গ্রাম করে প্রোটিন দরকার। দেহের ওজন কিলোগ্রামের সঙ্গে ০.৮ গ্রাম গুন করে সেই পরিমাণ প্রোটিন খেতে হবে প্রত্যেকের।

ধারণা দেওয়ার জন্য বলা হয়, ১০০ গ্রাম মুরগির মাংস, টুনা বা স্যামন মাচে রয়েছে ২৫ গ্রাম প্রোটিন। সমপরিমাণ প্রোটিন মিলবে বিভিন্ন বাদামের ১৩০ গ্রাম মিশ্রণ, ২০০ গ্রাম টফু কিংবা ২৫০ গ্রাম দইয়ে।

গবেষণায় বলা হয়, অতিরিক্ত প্রোটিন আবার ভালো নয়। এটি দেহে কার্বোহাইড্রেট বা ফ্যাটের মতোই দেহে ফ্যাট হিসাবে জমা হতে থাকে। এতে ওজন বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনির বেলাতেই প্রোটিন খাওয়া সবচেয়ে ভালো। তবে অনেকে দুপুর বা রাতের খাবারের সঙ্গে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

এই পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছেন যারা তাদের স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকাকে অনেক জটিল করে ফেলেছেন। এত চিন্তার কিছু নেই। আপনার চারপাশে যা রয়েছে সেখান থেকেই স্বাস্থ্যকর প্রোটিনের দেখা মিলবে। এগুলো দিয়েই সেরে ফেলুন প্রোটিনের অভাব। সূত্র : ইনডিপেনডেন্ট