সু চির ভাষণ: বিশ্বাস করছেন না বিশ্ব নেতারাও

এতোদিন চুপ থাকার পরে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে দেয়া সু চির বক্তব্যকে বিশ্বাস করছেন না বিশ্ব নেতারা। তারা আরও বলছেন,সু চির ভাষণে অনেক কিছুই গোপন করা হয়েছে।

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে যে ভাষণ দিয়েছেন তার সমালোচনা আসতে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকেও। ১৯ সেপ্টেম্বর দেয়া ওই ভাষণে মিজ সু চি রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা করেছেন কিন্তু মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিষয়ে কিছু বলেননি।

অথচ রাখাইনে ভয়াবহ নির্যাতনের জন্য সেনাবাহিনীকেই দায়ী করছে রোহিঙ্গারা।

অগাস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বাংলাদেশে আসতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে শতাধিক রোহিঙ্গার, আবার অনেকে এসেছেন যারা গুলিতে আহত হয়েছেন কিংবা বয়ে এনেছেন নিজের অগ্নিদগ্ধ শরীর।

অথচ মিজ সু চি বলেছেন অধিকাংশ মুসলিমই রাখাইনে অবস্থান করছে। তিনি মুসলিমরা সেখান থেকে পালাচ্ছে কেন সেটিও খুঁজে বের করার কথা বলেছেন। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতারা ইতোমধ্যেই মিজ সু চির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে এ বক্তব্যকে সেনাবাহিনীর বক্তব্য বলে আখ্যায়িত করেছেন।

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন অং সান সু চিকে ফোন করে বলেছেন যে, তার বক্তব্যকে তিনি স্বাগত জানাচ্ছেন যে শরণার্থীদের যাচাই করে ফিরিয়ে নেয়া হবে। কিন্তু তিনি একই সাথে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার দিকেও নজর দিতে বলেন।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ বলেছেন, ‘রাখাইনে সামরিক অভিযান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। মানবিক সহায়তার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। জাতিগত নিধন বন্ধে আইনের শাসন পুন:প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

তিনি বলেন সহিংসতা বন্ধ করে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য তারা নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে একটি উদ্যোগ নেবেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসও সামরিক অভিযান বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের ক্ষোভের দিকে দৃষ্টি দেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েফ এরদোয়ান সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সক্রিয় হওয়ার আহবান জানিয়েছেন যতক্ষণ না পর্যন্ত মিয়ানমারের ট্রাজেডির অবসান না হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন মুখপাত্র বলেছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের মিয়ানমার পরিদর্শনে যে আহবান জানিয়েছেন সু চি, তা এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। কারণ আগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাওয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেজা মেও রাখাইনে সামরিক অভিযান বন্ধ করার কথাই বলছেন।

আর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সু চির সমালোচনা করে বলেছে তিনি বালিতে মাথা গুঁজে আছেন।