সৌম্য সরকারের ভাতিজাকে অপহরণ!

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ক্রিকেটার সৌম্য সরকারের ভাতিজা সুমন ও লিটু নামের অপর এক ছেলেকে অপহরণের পর দুই লাখ ৮০ টাকায় মুক্তি নিয়েছে সাতক্ষীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

সোমবার বিকেলে সাতক্ষীরা শহরের ইসলামি ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতারের পেছনের ক্যান্টিন থেকে এ অপহরণের ঘটনা ঘটে।

অপহরণকৃত সুমন বিশ্বাস সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার মহিষাডাঙ্গা গ্রামের হরিদাশ বিশ্বাসের ছেলে। ক্রিকেটার সৌম্য সরকারের ভাতিজা। অপর অপহরণকৃত যুবক লিটু সুমনের বন্ধু।

বর্তমানে মৃত্যু ভয়ে আতঙ্কিত পরিবারটি কোনোভাবেই ঘটনাটি প্রকাশ করতে চায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সৌম্য সরকারের পরিবারের এক সদস্য ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার বিকেলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে সুমন, লিটু ও অপর একজন সাতক্ষীরার স্থানীয় ছেলে ছিল। অতর্কিতভাবে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক রবিনসহ অজ্ঞাত তিনজন তাদের জিম্মি করে। এরপর সাতক্ষীরার স্থানীয় ছেলেটিকে ছেড়ে দিয়ে সুমন ও লিটুকে একটি ভাড়া করা প্রাইভেটকারে অপহরণ করে নিয়ে যায়। রবিন শহরের ডেনাইট কলেজ এলাকার বাসিন্দা ও ছাত্রলীগ নেতা।

তিনি আরও বলেন, এরপর ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। একটি ঘরের মধ্যে নিয়ে তাদের আটকে রাখে। সঙ্গে থাকা মোটরসাইকেলটিও জিম্মি করে নেয় তারা। পরবর্তীতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা দেয়ার পর বন্দিদশা থেকে মুক্তি দেয় সুমন ও লিটুকে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের মধ্যে প্রাইভেটকার থেকে নামিয়ে দেয়া হয় তাদের দুইজনকে।

এদিকে, ভয়ে আতঙ্কিত অপহৃতের গোটা পরিবার। সুমন সাতক্ষীরা শহরের মুন্সিপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। বর্তমানে গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন। তিনি ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত রবিন নিজেকে জেলা ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক দাবি করে বলেন, সুমন নামের ছেলেটি অনলাইনে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়। এমন ঘটনা আমাদের ছাত্রলীগের এককর্মীর সঙ্গে ঘটিয়েছে। পরবর্তীতে বিষয়টি আমাদের জানালে তাকে নিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শহরের পলাশপোল এলাকার অ্যাডভোকেট তামিম হোসেন সোহাগের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তার কাছ থেকে টাকা নেয়া বা চাঁদা দাবির কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমাদের সঙ্গে মোস্তফা নামের অপর আরেকজন ছিলেন।

এদিকে, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এহসান হাবিব অয়ন বলেন, রবিন জেলা ছাত্রলীগের কমিটির দফতর সম্পাদক ছিলেন। তবে বর্তমানে রবিন তাঁতীলীগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।

তবে অপহরণের পর মুক্তিপণ নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অ্যাডভোকেট তামিম হোসেন সোহাগ বলেন, একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। এছাড়া কিছু ঘটেনি।

এ বিষয়ে সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ আহম্মদ বলেন, এমন কোনো ঘটনা আমাদের জানা নেই। আপনার মাধ্যমেই জানলাম। তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।