সড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে ভিআইপিদের আগে আইন মানা উচিত : কাদের

সড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে ভিআইপিদেরকে আইন মেনে চলতে আবারও তাগাদা দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। নিজের কথাও উল্লেখ করে বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে পরামর্শ দেয়ার আগে আমাদের আগে আইন মানা উচিত।’

বৃহস্পতিবার সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে প্রস্তাবিত দায়যুক্ত ব্যয় ছাড়া অন্যান্য ব্যয় সম্পর্কিত মঞ্জুরি দাবির ওপর ভোট গ্রহণ চলাকালে ছাঁটাই প্রস্তাবের জবাবে এ কথা বলেন সড়ক মন্ত্রী।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা ভিআইপি, এমপি, মন্ত্রী। একটু চাপ দেখলেই আমাদের ধৈর্য মানে না। আমরা সহ্য করতে পারি না। আমাদের সহিষ্ণুতার বড় অভাব। তখন আমরা রাস্তার উল্টো পথে যাই এবং যানজটের সৃষ্টি হয়। ভিআইপিদেরও এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ বিশেষ সময় পুলিশ নিয়ে যাবে সেটা ভিন্ন কথা।’

বিভিন্ন মহাসড়কে যানজটের জন্য সবার আগে যাওয়ার মানসিকতাকে দায়ী করে মন্ত্রী বলেন, ‘রাস্তায় যানজটের জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং সমস্যা নাই। সমস্যা আমাদের সচেতনতার। মন মানসিকতার পরিবর্তন না হলে রাস্তার যানজট দুর হবে না।’

ঈদের দিন রাঙ্গামাটি পরিদর্শন করে ঢাকায় ফেরার সময় কাঁচপুরে দীর্ঘ যানজটে আটকে থাকার কথা বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সেখানে আট লেনের রাস্তা। তবু এই অবস্থা হয়েছে।’

বেশ কয়েকটি উড়াল সড়ক ও মেট্রোরেলের কাজ একযোগে চলছে জানিয়ে সড়ক মন্ত্রী বলেন, এগুলোর কাজ শেষ হয়ে এলেই যানজট কমে যাবে।

ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুর অংশে যানজট নিরসনে সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, ‘একটু ধৈর্য ধরুন, বছর দেড়েক দুয়েক। সেখানে বিআরটি (বাস র‌্যাপিড টার্নজিট) হচ্ছে। তিন জোড়া বাস এক সঙ্গে চলবে। গাজীপুর থেকে উত্তরার জসিমউদ্দিন পর্যন্ত পাঁচটি ফ্লাইওভার হবে এবং টঙ্গী ব্রিজ আট লেন হবে। … টঙ্গীবাজার ঘিরে চার কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হবে। এরপর আর যানজট থাকবে না।’

‘মেট্রো রেলেও কাজ হচ্ছে। এ কাজগুলো শেষ হয়ে গেলে যানজট কমে যাবে। এছাড়াও আব্দুল্লাপুর থেকে বাইপাইল হয়ে ইপিজেড পর্যন্ত আরেকটা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্পের অনুমোদন এক সপ্তাহের মধ্যে একনেকে হবে।’

‘পদ্মা সেতৃকে ঘিরে সংযোগ সড়কগুলো চারলেন করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে এবং বাস্তবায়ন করা হবে। এটা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি এবং পালন করা হবে। বগুড়া থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেইনের কাজের জন্য ১২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প একেনেকে পাস হয়েছে। সেই কাজটিও প্রক্রিয়াধীন। এরপরে হবে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে বুড়িমারী থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত কাজ প্রক্রিয়াধীন’-বলেন সড়ক মন্ত্রী।

ওবায়দুল কাদের জানান, বর্তমান সময়ের আমলে সড়ক মহাসড়কে উন্নয়নে বাজেট এক হাজার কোটি টাকা থেকে ১৭ হাজার কোটি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘টাকা বেশি হলে খরচ বেশি হয়, তা আমাদের দেশে বলার সময় এখনও আসেনি। এখানে কিছু কিছু অনিয়ম আছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। আমরা শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত হয়েছি তা এখনও বলার উপায় নেই।’