হাওরে ত্রাণের বরাদ্দ অত্যন্ত হাস্যকর : সুলতানা কামাল

হাওর এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে দেওয়া সরকারের ত্রাণ অত্যন্ত হাস্যকর ও অসম্মানজনক বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। পরিসংখ্যান করে সম্মানজনকভাবে ত্রাণ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার রাজধানীর তাজুল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হাওর কনভেনশনে এসব কথা বলেন সুলতানা কামাল।

সুলতানা কামাল বলেন, ‘অত্যন্ত হাস্যকর এবং অসম্মানজনক একটা বরাদ্দ। ৩০ কেজি চাল যদি প্রতি মাসে দেওয়া হয়, তার মানে এক কেজি চাল দৈনিক। সেই এক কেজি চাল দিয়ে পাঁচজনের পরিবারের তিন বেলার অন্নসংস্থান কীভাবে হয়? ৫০০ টাকা খরচ করতে বোধহয় এখন এক মিনিট সময়ও লাগে না।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘ত্রাণ যদি দিতেই হয় সম্মানজনকভাবে দেওয়া হোক, প্রয়োজন অনুসারে দেওয়া হোক, পরিসংখ্যান নিয়ে। কথায় কথায় আমি দিচ্ছি, আমরা করছি সেটা কথা নয়। তাঁরা (সরকার) করছেন একটা দায়িত্বের প্রেক্ষিতে, এটা কোনো দয়ার দান নয়।’

আগাম বন্যায় বিপর্যস্ত হাওর এলাকায় এখনো পচে যাওয়া ধান শুকিয়ে খাচ্ছে মানুষ। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুর খাবারেরও চলছে আকাল। কোনো কাজ নেই, তাই আয় নেই বলে ঋণের কিস্তি এড়াতে অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বাসদ ও কমিউনিস্ট পার্টি আয়োজিত হাওর কনভেনশনে এমন দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেন হাওরাঞ্চল থেকে আসা প্রতিনিধিরা।

হাওরবাসীর এই দুরব্স্থার জন্য বাঁধ নির্মাণ ও জলাশয় ইজারার সঙ্গে জড়িত দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার, স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবির পাশাপাশি বাস্তবসম্মত ত্রাণ বিতরণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

বক্তারা হাওরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে স্থানীয়দের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করারও দাবি জানান। সেই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে হাওর সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে সরকারের প্রতি তাগিদ দেন তাঁরা। হাওরের জলমহালের ইজারা এক বছরের জন্য বাতিলেরও দাবি জানানো হয়।