হাজিরা দিতে আদালতে খালেদা

জিয়া চ্যারিটেবল ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে বিশেষ আদালতে উপস্থিত হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসার মাঠে ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে তিনি উপস্থিত হয়েছেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আত্মপক্ষ সমর্থন ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য দেয়ার দিন ধার্য রয়েছে আচ। তবে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা (পুনরায়) শেষ না হওয়ায় তাকে আবারও জেরা করবেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) জিয়া চ্যারিটেবল টাস্ট্র দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশীদকে জেরা করেন খালেদার আইনজীবী রেজ্জাক খান। জেরার এক পর্যায় তিনি তদন্ত কর্মকর্তকে বলেন, আপনি আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে মামলার তদন্ত করেছেন। এ সময় আদালত এ মামলার পরবর্তী জেরার জন্য আজকের (২২ জুন) দিন ধার্য করেন। এ ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষের সমর্থনের জন্য একই দিন ধার্য করেন আদালত।

অপরদিকে খালেদার আইনজীবীরা আদালতে আরেকটি আবেদন দাখিল করেন। আবেদনে উল্লেখ করেন, মামলায় বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় ডকুমেন্ড নথির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে, যা অপ্রাসাঙ্গিক। এগুলো মামলার নথি থেকে বাদ দিতে হবে এবং পরবর্তী তারিখে আমরা এ বিষয় শুনানি করব।

এর আগে গত ৮ জুন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদকে পুনরায় জেরা করার অনুমতি দিয়েছিলেন আদালত।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।