১২ বছর পর ধর্ষণের বিচার পেল তরুণী

লক্ষ্মীপুরে ১২ বছর পর বিচার পেল ধর্ষণের শিকার এক তরুণী। ধর্ষণের ঘটনায় ওই তরুণীর গর্ভে আসা শিশু সন্তানের বয়স এখন ১১ বছর।

ধর্ষণের দায়ে আসামি মাইন উদ্দিন ও সহযোগিতা করায় ভাবি হালিমা খাতুনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

আদালত রায়ে ধর্ষণের শিকার তরুণীর ১১ বছর বয়সী কন্যা সন্তানকে রাষ্ট্রীয় খরচে লালন-পালনের জন্য জেলা প্রশাসককে (ডিসি) নির্দেশ দেন।

এছাড়াও ধর্ষণের শিকার তরুণী স্বামী হিসেবে ও কন্যা পিতা হিসেবে আসামি মাইন উদ্দিনের পরিচয় বহন করবে বলে আদালতের আদেশে বলা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাইদুর রহমান গাজী এ রায় ঘোষণা করেন।

জজ কোর্টের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আবুল বাশার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, রায় ঘোষণাকালে আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মাইন উদ্দিন সদর উপজেলা শাকচর গ্রামের রহিম উদ্দিন বেপারি বাড়ির দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ও হালিমা খাতুন একই বাড়ির প্রবাসী নুরুল ইসলামের স্ত্রী।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শাকচর গ্রামের মাইন উদ্দিন তরুণীর সম্পর্কে চাচাতো ভাই। প্রায় সে তাদের ঘরে আসা-যাওয়া করতো এবং তাকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতো। এতে রাজী না হওয়ায় তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সে।

২০০৫ সালের ১০ এপ্রিল রাতে একই বাড়ির প্রবাসী নুরুল ইসলামের স্ত্রী হালিমা খাতুনের শ্বাশুশি বাড়িতে না থাকায় তার সঙ্গে রাতে ঘুমানোর জন্য তরুণীকে নিয়ে যায়। ওই রাতে হালিমার সহযোগিতায় মাইন উদ্দিন ঘরে আসে। তাকে দেখে তরুণী চিৎকার করে উঠে। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়। কিছুদিন পর তরুণীর গর্ভে সন্তান আসে।

স্থানীয় ব্যক্তিরা বাড়িতে এসে ঘটনার সত্যতা পায়। কিন্তু মাইন উদ্দিন ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে।

২০০৫ সালের ৩০ অক্টোবর ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তরুণী বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এরপর ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর দুই আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

দীর্ঘ সাক্ষ্য-গ্রহণ ও শুনানি শেষে আসামিদের উপস্থিতিতে আজ আদালত এ রায় দেন।