১৯ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রসহ শ্রমিক লীগ নেতা গ্রেফতার

কক্সবাজারের সাগরদ্বীপ কুতুবদিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের পরান সিকদারপাড়ার একটি বাড়ি থেকে ১৯টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রসহ মনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোররাতে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

মনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী কক্সবাজার জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কৈয়ালবিল ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি। এ সময় মনোয়ারের বাড়ি থেকে ৬২১টি গুলি উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে মুকুল রাজনীতির ছত্রচ্ছায়ায় সাগরে জলদস্যুদের লালন-পালন করেন। এলাকায় ‘মুকুল বাহিনী’ নামে একটি সন্ত্রাসী বাহিনীও আছে। উপকূলে কৃষকের জমি ও দোকানপাট দখল এবং সাগরে মাছ ধরার ট্রলারে লুটপাট চালিয়ে তিনি বহু ধনসম্পদের মালিক হয়েছেন। কুতুবদিয়ায় থানাসহ বিভিন্ন আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে জমি দখল, অস্ত্রসহ পৃথক ছয়টি মামলা আছে।

র‍্যাব-৭ কক্সবাজার অঞ্চলের কোম্পানি কমান্ডার (অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া) মেজর রুহুল আমিন বলেন, সন্ত্রাসী বাহিনীর হোতা মনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরীর বাড়িতে বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র মজুত রাখার খবরের ভিত্তিতে র‍্যাবের একটি দল আজ ভোররাত তিনটার দিকে তাঁর বাড়ি ঘেরাও করেন। এরপর ঘরের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়ে ১৯টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬২১টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ১৩টি ওয়ান শুটারগান ও ৬টি এসবিবিএল। এ সময় বাড়ির মালিক মনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র মজুত ও সাগরের লুটপাটের ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

আজমকলোনী গ্রামের দুজন লবণচাষি অভিযোগ করেন, মনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী একাধিক জলদস্যু বাহিনী দিয়ে সাগরে মাছ ধরার ট্রলারে লুটপাট চালিয়ে কোটিপতি বনে যান। কয়েক বছর ধরে এলাকায় নিজের নামে ‘মুকুল বাহিনী’ গড়ে তুলে লোকজনের জমিজমা কেড়ে নিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় এলাকার কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পান না। র‍্যাবের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ধরা পড়ার খবরে এলাকায় লোকজনের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে মনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ পাচ্ছেন। লোকজনের জমি, দোকানপাট দখল ও গত ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।