৯ বলে তিন উইকেট হারিয়ে শেষের পথে

৬৭ ওভারের পঞ্চম বল থেকে ৭০ ওভারের প্রথম বল। এই ৯ বলে একটিও রান হলো না। পড়ল তিন উইকেট। মুশফিকুর রহীম, নাসির হোসেন আর সাব্বির রহমান। একে একে আউট হয়ে গেছেন এই তিনজন। ১৮৬ রানে দল হারায় ৮ উইকেট। ৩০০ রানের লিডের আশা এখন অনেকটাই ফিকে। শফিউল ইসলামকে (২) নিয়ে উইকেটে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ (১৭)। ৮ উইকেটে ২০৫ রান তুলে চা বিরতিতে গেছেন তারা। লিড দাঁড়িয়েছেন ২৪৮ রানের।

সাকিব আল হাসানের আউটের পর সাব্বির রহমানকে নিয়ে ছোট খাট জুটি গড়ে তুলেছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। লায়নের বলে বলে সাব্বির সাথে ভুল বোঝাবুঝি অধিনায়কের। নিজের বলেই ফিল্ডিং করে মুশফিককে ফেরান লায়ন। ১১৪ বলে ৪১ রান করে দৃঢ়তার পরিচয় দিচ্ছিলেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।
অনেকদিন পর দলে জায়গা পেয়েছিলেন নাসির হোসেন। সুযোগ একেবারেই কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। শূন্য রানেই অ্যাস্টান অ্যাগারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। আক্রমণাত্মক খেলছিলেন প্রথম ইনিংসে গোল্ডেন ডাক মারা সাব্বির রহমান। তবে তার ৩৬ বলে ২২ রানের ইনিংসটি শেষ হয়েছে লায়নের বলে হ্যান্ডসকম্বের হাতে জমা পড়ে।
মুশফিক-সাব্বিরের ৪৩ রানের জুটির আগে ৫ রান করে আউট হন আগের ইনিংসের হিরো সাকিব আল হাসান। ৫৬তম ওভারে ন্যাথান লায়নের বলটা এগিয়ে এসে এক্সট্রা কাভার অঞ্চল দিয়ে উড়াতে চেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু ব্যাটে বলে টাইমিং হয়নি। টপ এজ হয়ে বল চলে যায় এক্সট্রা কাভারে দাঁড়ানো প্যাট কামিন্সের হাতে।
প্রথম ইনিংসে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেছিলেন সাকিব। পরে বল হাতে নেমে রেকর্ড ৫ উইকেট নিয়ে এখন পর্যন্ত এই ম্যাচের তিনিই হিরো। সাকিব যখন আউট হন দলের লিড ১৮৬ হয়েছে। মিরপুরের টার্নিং পিচে অস্টেলিয়ানদের অন্তত ৩০০ রানের টার্গেট দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন দলের হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা মেহেদী হাসান মিরাজ। তামিমের পর সাকিবের উপরই নির্ভর করছিল বড় টার্গেটের আশা।
মঙ্গলবার শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিনের সকালে অস্ট্রেলিয়ানদের জোড়া সাফল্য এনে দেন স্পিনার ন্যাথান লায়ন। নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলামকে (৪) আউট করার পর তার বলে ২ রান করেই ফিরে যান ফর্ম হারানো ইমরুল কায়েস। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৬ বলে ০ নিয়ে ফিরেছিলেন এই ব্যাটসম্যান।
৬৭ রানে তিন উইকেট পড়ে গেলেও চাপ টের পেতে দেননি তামিম ও মুশফিক। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৬৬ রান তুলে লাঞ্চে যান তারা। কিন্তু লাঞ্চের পর বিপর্যয়। খেয়েদেয়ে দ্বিতীয় ওভারে বল করতে আসেন প্যাট কামিন্স। তার ওভারের দ্বিতীয় বলটি হঠাৎ লাফিয়ে উঠে। আচমকা বাউন্সার সামলাতে হতভম্ব তামিমের গ্লাভস ছুঁয়ে উইকেটকিপার ম্যাথু ওয়েডের হাতে জমা হয়। তবে অস্ট্রেলিয়ানদের জোরালো আবেদনে শুরুতে সাড়া দেননি মাঠের আম্পায়ার আলিম দার। রিভিউ নিয়ে তামিমকে ফেরান স্মিথ। প্রথম ইনিংসে ৭১ রান করা তামিম এবারো সেঞ্চুরি বঞ্চিত।
ইনিংসের ৫৩তম ওভারে ফিরেছেন। সাথে ৭৮ রান এবার। বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি (২৪) ফিফটির রেকর্ডে অবশ্য হাবিবুল বাশারের পাশে নাম লিখিয়েছেন তামিম। আর মুশফিকের সাথে আউট হওয়ার আগে মূল্যবান ৬৮ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি গড়ে গেছেন।